21 C
আবহাওয়া
১২:১৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চোখের ক্ষুধা মেটাচ্ছে ‘ডিসি ফুল পার্ক’!

চোখের ক্ষুধা মেটাচ্ছে ‘ডিসি ফুল পার্ক’!

চোখের ক্ষুধা মেটাচ্ছে ‘ডিসি ফুল পার্ক’!

।। শামীমা চৌধুরী শাম্মী ।।

‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা/ খাদ্য কিনিও ক্ষুধারলাগি/ দুটি যদি জোটে অর্ধেক তার/ ফুল কিনিও হে অনুরাগী।’- কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ‘ফুলের ফসল’ কবিতায় এভাবে ফুলের প্রতি তার ভালবাসা প্রকাশ করেন। পেটের ক্ষুধার পাশাপাশি মনের ও চোখেরও ক্ষুধা আছে! মানুষের এমন ক্ষুধা মেটাতে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে সমুদ্রের কাছে ১৯৪ একর খাস জমিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছেন ‘ফুল পার্ক’। দেশের সবচেয়ে বড় ‘ফুল পার্ক’ এটি।

এক বছর আগেও এই পার্কের জায়গাটি ছিল মাদকের আখড়া। বিশাল খাস জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদের এক মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো সাত দিনব্যাপী ফুল উৎসবের আয়োজন করে হৈ-চৈ ফেলেছিল জেলা প্রশাসন। এতে মানুষের ব্যাপক সাড়ার পাশাপাশি পার্কটি একটি মডেল হিসেবে গড়ে উঠে। পার্কটিতে এবার দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে ফুল উৎসব। এবার একমাসব্যাপী ফুল উৎসব চলবে। ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এই ফুল উৎসব। শেষ হবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। মূল উৎসবের আগেই দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।

ডিসি ফুল পার্ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই পার্কটির দুই পাশে ফুলের রাজ্য। কী নাই এই ফুল রাজ্যে! ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, কামিনী, বেলি, চেরিসহ দেশি-বিদেশী ফুলের সুবাসে ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশ। দেশি-বিদেশি ১২৭ প্রজাতির লক্ষাধিক ফুলের সমারোহ রয়েছে এখানে।

চট্টগ্রামে এখন আকর্ষণীয় স্থান বঙ্গবন্ধু টানেল ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। টানেল ও সৈকতের সৌন্দর্যের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে ডিসি ফুল পার্ক। বৈকালিক সৌন্দর্য ও সূর্যাস্ত অবলোকনের আগে অনেকেই ঢু মারছেন ফৌজদারহাটের ডিসি ফুল পার্কে। ফৌজদারহাট মেরিন সড়কের এই ‘ডিসি ফুল’ পার্কটি হয়ে ওঠেছে বিনোদনের অপূর্ব এক স্থান। পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের ফলে ডিসি ফুল পার্ক এখন ফুলের সৌন্দর্য ও সৌরভে বিমোহিত করছে দর্শণার্থীদের।

ডিসি ফুল পার্কের বাগানে থাকা লাল, হলুদ, সাদা, গোলাপি, বেগুনি, সবুজ রঙের ফুল গাছগুলো রীতিমতো আলোকিত করে রেখেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। নয়নাভিরাম এই ফুল পার্কের মাঝখানে বিশালাকার পুকুর। সন্ধ্যায় চালানো হয় পানির ফোয়ারা। মাঠজুড়ে নানা নকশায় লাগানো হয়েছে ফুলগাছ। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সব বয়সের হাজার হাজার ফুল প্রেমিক ভিড় জমাচ্ছে। তবে মনের ও চোখের এই ক্ষুধা মেটাতে গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা।

জেলা প্রশাসন জানায়, এবার নেদারল্যান্ডস থেকে বীজ এনে ফুটিয়েছে নানা রংয়ের প্রায় পাঁচ হাজার টিউলিপ। উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য থাকবে চট্টগ্রামের চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম। উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থাও থাকবে। আয়োজন করা হবে ঘুড়ি উৎসব, আতশবাজি, পুতুলের নাচ ও জাদু প্রদর্শনী। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

গত বছর প্রথমবারের মতো ফুল উৎসবে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। মানুষের উৎসাহ দেখে এ বছর বৃহৎ পরিসরে মাসব্যাপী ফুল উৎসব আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এত রং আর হাজার হাজার ফুলের বাহার সত্যি অসাধারণ চমৎকার এক অনুভূতি। চারপাশে এত রং আর এত ফুল! প্রকৃতি ও ফুলপ্রেমীদের মনের মন্দিরে ভালোবাসার পূজার ফুল হয়ে থাকবে অনেক দিন। তাইতো সন্ধ্যার আলো-আঁধারে কারো কারো অবাধ্য মন, বিষণ্মতায় গেয়ে ওঠে, ‘বেঁধেছি মনশয্যা ফুলের বিছানায়।’

বিএনএনিউজ টুয়েন্টি ফোর/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ