বিএনএ ঝিনাইদহ: “ঠিলে ধুয়ে দেরে বউ গাছ কাটতে যাব” এই হলো খেজুর বৃক্ষকে কেন্দ্র করে তৈরি গাছি সম্প্রদায়ের বুলি। তাদের শিউলিও বলা হয়। ঝিনাইদহের ভাষায় সেই গানের কথা মনে পড়ে যায় শীত আসার আগেই খেজুরগাছ চাষীদের । এরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। তাই শীতকালে গাছিদের কদর বেড়ে যায়, তারা দিনভর মহাব্যস্ত থাকেন।
গাছিরা খেজুর গাছ তোলা-চাছার জন্য দা, চোং বা নলি, কাঠি, দড়ি, ভাঁড় ইত্যাদি জোগাড় করার জন্য ব্যস্ত থাকেন। শীতকালে গাছিদের কর্মসংস্থান হয়। সকালেও শিশির ভেজার পথ। যা শীতের আগমনের বার্তা জানান দিচ্ছে। এরই মধ্যে ঝিনাইদহের গাছিরা আগাম খেজুর গাছ তুলতে শুরু করেছে।
শীতে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে বেড়াতে গেলেও সাথে রস বা গুড় নিয়ে যেতে দেখা যায়। খেজুরের মুচিতে এক ধরনের সাদা পাউডার জাতীয় পদার্থ থাকে, যা মুখে মাখে, শিশুরা নানা খেলায় মেতে ওঠে। বৃক্ষ প্রেমিক জীবনানন্দের ভাষায় সহসাই মূর্ত হয়েছে, বসেছে বালিকা খর্জ্জুরছায়ে নীল দরিয়ার কূলে। বাংলার রূপ কবিতায় সফিনাজ নূরুন্নাহারের ভাষায় মায়ের হাতের রসের পিঠা, মধুর মতো খেজুর মিঠা। তাই মনে পড়ে মায়ের কথা, মনে পড়ে মামা বাড়ি বেড়ানোর স্মৃতিকথা।
এক কেজি গুড় তৈরি করতে খরচ ৪০-৫০ টাকা আর বিক্রি করতে হয় ৫৫-৬০ টাকা বড় জোর ৭০টাকার বেশি নয়। যে কারনে চাষিরা গুড় বানাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুরের সাব্দার হোসেন বলেন, আগাম গাছ তুললে আগেই গুড়, পাটালি তৈরি করা যায়। তাই দামও চাহিদা ভালো থাকে। তবে এখন আর আগের মত গাছি পাওয়া যাচ্ছেনা। গ্রামাঞ্চলে হাতে গনা কয়েকজন গাছি, যারা খেজুর গাছ কাটতে পারে। পরিশ্রমের তুলনা লাভ কম, তাই নতুন করে ছেলেরা আর খেজুর গাছ কাটতে চাইনা ।
বিএনএনিউজ/ আতিক/এইচ.এম।