বিএনএ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার জন্য দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও বৈশ্বিক সংহতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ (জিসিআরজি) চ্যাম্পিয়নদের সাথে জাতিসংঘ মহাসচিবের গোলটেবিল বৈঠকে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ছয় দফা প্রস্তাব উত্থাপনের সময় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত করেছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা ও এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও বিপর্যয় নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়ে মানুষকে গভীরভাবে আঘাত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরাসরি সংঘাতের সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এবং উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত বিশ্বের মানুষকে বেশি আঘাত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো একক দেশ একা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে না। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও বৈশ্বিক সংহতি। এ বিষয়ে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট চিন্তা সবার সঙ্গে শেয়ার করেন শেখ হাসিনা।
প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বৈশ্বিক আর্থিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবেলা করতে হবে। ‘জি-৭, জি-২০, ওইসিডি, আইএফআই ও এমডিবি’কে এখন তাৎক্ষণিক উদ্বেগগুলো মোকাবেলা করার প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এসডিজি অর্থায়নের অভাব, সীমিত আর্থিক সংস্থান, ক্রমহ্রাসমান ওডিএ এবং ঋণ পরিষেবা।’
দ্বিতীয়ত, ব্ল্যাক সি গ্রেইন উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষেত্রে জাতিংসঘ মহাসচিবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সাধুবাদ জানান শেখ হাসিনা। বলেন, আমরা সংঘাতের সময় খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাকে ক্ষতির হাত থেকে দূরে রাখার জন্য ভবিষ্যতের যে কোনো উদ্যোগকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সাহসী ও ব্যাপক পদক্ষেপের প্রয়োজন এবং বিশ্ব বাণিজ্য ও রপ্তানি আয়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ন্যায্য অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, উৎপাদন বাড়াতে এবং কার্যকর খাদ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে প্রযুক্তি সহায়তা, বর্ধিত ওডিএ এবং রেয়াতি অর্থায়নের লক্ষ্যে আমাদের আরও জি২জি ও বি২বি সহযোগিতার প্রয়োজন।’
পঞ্চম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সহযোগিতার জন্য বৈশ্বিক কাঠামোকে আরও কার্যকর এবং ন্যায্য করতে হবে। আসন্ন কপ-২৭ এর সুযোগটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর উদ্বেগ নিরসনে কাজে লাগানো উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অংশীদারিত্বের সাথে কাজ করতে চাই যাতে সার্বিক উপায়ে জ্বালানি নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবেলায় প্রয়েজনীয় উদ্দীপনা সৃষ্টি করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবকে তার নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, তার প্রচেষ্টায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির এ ব্যাপারে একটি পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছা যাবে।
বিএনএ/এ আর