বিএনএ ঝিনাইদহ: ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শৈলকুপার শেখপাড়া-লাঙ্গলবাধ সড়ক নির্মাণ কাজে অফিসের কোন তদারকি নেই। গত ৫ দিন ধরে গণমাধ্যম কর্মীরা নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেও অফিসের কোন কর্মকর্তা এমনটি কার্য্য সহকারীদের দেখা মেলেনি। তাই ঠিকাদার তার ইচ্ছামতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে নির্মানাধীন রাস্তার পাশে বড় বড় গর্ত খুড়ে সেই মাটি রাস্তার সাইটে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যে কোন সময় নির্মানাধীন রাস্তা ধসে পড়তে পারে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাস্তার পুরানো ইট, পিচযুক্ত খোয়া ও ময়লামাটি বালি দিয়ে রাস্তা তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের সেদিকে কোন নজর নেই।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের শৈলকুপার শেখপাড়া থেকে লাঙ্গলবাধ পর্যন্ত ১৮ ফিট চওড়া, ২৬ কি.মি দৈর্ঘ্য সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মাইনুদ্দিন বাশি লি: এন্ড মিজানুর রহমান জেভি। গত মার্চ মাস থেকে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজ শুরু করতে গিয়ে স্থানীয় রানীনগর স্কুলের মাঠ দখল করে নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যে কারণে শিশু শিক্ষাথীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। রাস্তায় ব্যবহৃত ইট, খোয়া ও বালু খুবই নিম্ন দেখা গেছে। পুরাতন ইটের সাথে ও নতুন ইটের খোয়া মিশিয়ে এবং পুরাতন পাথরের সাথে মিক্সড করা হচ্ছে নতুন পাথর। ঠিকমত রোলারও করা হচ্ছে না। সারাদিন ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
মাঝেমধ্যে সড়ক ও জনপদ বিভাগের ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট মতিয়ার রহমানের দেখা মিললেও কোন কর্মকর্তা সাইটে আসেন না। দেদারছে এই নিম্নমানের কাজ চলায় এলাকাবাসি প্রশ্ন তুলেছে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নির্মাণ কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব কার ?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্মানাধীন রাস্তার একেবারেই কোল ঘেঁষে মাটি কাটার ফলে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ১০/১২ ফুট গর্ত করে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছ্।ফলে যে কোন সময় রাস্তা ধ্বসে যেতে পারে। টেন্ডারে রাস্তার দুই পাশের মাটি ভরাটের জন্য আলাদা টাকা বরাদ্দ থাকলেও রাস্তার কোল ঘেঁষে মাটি কেটে উল্টো নতুন করে গর্তর সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে শেখপাড়া বসন্তপুর এলাকায় অবৈধভাবে রাস্তা সংলগ্ন কালী নদীর মাটি কেটে রাস্তার বর্ধিত অংশ ভরাট করা হচ্ছে। বাইরে থেকে মাটি এনে রাস্তার বর্ধিত অংশের কাজ করার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদার মাছের তেলে মাছ ভেজে খাচ্ছে। শৈলকুপার ধাওড়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম অভিযোগ করেন, রাস্তার কাজ হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সিডিউল মোতাবেক নয়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছামত।
পাইকপাড়া গ্রামের আমিরুল অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রাস্তার বেশীরভাগ কাজ হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। এ ভাবে সরকারী লুটপাটের নিন্দা জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করছি। কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না।
ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমরা কাজটি তদারকি করছি। গতকালও সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। সার্ভেয়ার মতিয়ার রহমান মাঝে মধ্যে যাচ্ছেন। এ ভাবে রাস্তার পাশ থেকে ও নদী কেটে মাটি নেয়ার জন্য আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছি।
বিএনএ/আতিক, ওজি