বিএনএ,চট্টগ্রাম: করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে দেশে ছুটি কাটাতে আসা প্রবাসীদের টিকা দিতে হয়রানি বন্ধ ও টিকা নিশ্চিতের দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার প্রবাসী। মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ১১টায় নগরীর আগ্রাবাদ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রবাসীদের আহ্বায়ক ইয়াসিন চৌধুরী বলেন, মূলত টিকার বিষয়ে আমাদের আজকের কর্মসূচি। সরকার আমাদেরকে আগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ৩ নম্বরে রাখছেন। এতো অগ্রাধিকারের পরও আমরা টিকা পাচ্ছি না। আমরা যদি টিকা না পায় তাহলে আমরা বিদেশে ফিরব কিভাবে। প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গেলে তারা আমাদেরকে শ্রমশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসে যেতে বলে। সেখানে গেলে তারা বলছে টিকার জন্য চেষ্টা চলছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের এসব হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে অনেক প্রবাসীর ভিসা ও পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। আমরা তো দেশের অর্থনীতির চাকাগুলো চালু রাখছি। এখন আমরা যদি এভাবে অবহেলিত হই তাহলে আমরা বুঝি না এদেশে কি হবে।
এ বিষয়ে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, টিকা নেওয়ার মাধ্যম হলো সুরক্ষা অ্যাপসে নিবন্ধন। প্রধানমন্ত্রীও নিবন্ধন করেই টিকা গ্রহণ করেছেন। সুরক্ষা অ্যাপে আপাততঃ নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে। ওই অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু বিশাল সংখ্যক প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাই তাদের দাবি পাসপোর্ট নম্বর এবং বৈধ ভিসা নম্বর দিয়ে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। তাদের দাবি মানা ছাড়াও প্রবাসীরা আরও সহজে কীভাবে টিকা গ্রহণ করতে পারেন, সে বিষয়ে সরকার কাজ করছে। আশা করছি, শিগগির এর একটা সমাধান হবে।
এদিকে, কোভিড-১৯ টিকার দুই ডোজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রবাসীরা। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদারের হাতে স্মারকলিপি দেন তারা। এ সময় প্রবাসীদের পক্ষে প্রতিনিধি হিসিবে স্মারকলিপি দেন দুবাই প্রবাসী ইয়াসিন চৌধুরী, মো. নেওয়াজ, রেজাউল করিম, মো. রুবেল প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে তিনটি দাবি রয়েছে- সুরক্ষা অ্যাপস চালু করে প্রবাসীদের নিবন্ধনের আওতায় আনা, প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকলে পাসপোর্ট ও বৈধ ভিসার ভিত্তিতে নিবন্ধন এবং জরুরি ভিত্তিতে দুই ডোজ টিকা দেওয়া নিশ্চিত করা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমে বিদেশগামী প্রবাসীদের ৩ নম্বরে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ৩ দিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে যোগাযোগ করেও প্রবাসীরা টিকার বিষয়ে সমাধান পাচ্ছি না। এছাড়া প্রবাসীরা জটিলতা ছাড়া কোভিড টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিএনএনিউজ/মনির