বিএনএ ডেস্ক: চরম আর্থিক সংকটে থাকা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২৯০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ পাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এ কথা জানিয়েছেন। আইএমএফের বোর্ডও এই ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই ঋণ-সহায়তা পেয়ে শ্রীলঙ্কা একটু আশার আলো দেখতে পেল। অবশ্য এতে তাদের ঋণের বোঝাও বাড়ল।
ডয়চে ভেলে জানায়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইএমএফ ২ দশমিক ৯০০ কোটি ডলারের ঋণ-সহায়তার (বেলআউট) অনুমোদন দিয়েছে। তিনি আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সহযোগীদের এই সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে দীর্ঘ মেয়াদে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চান।
শর্তসাপেক্ষে দেয়া এই ঋণ-সহায়তার বিষয়ে আইএমএফ জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ কোটি ডলার দেবে। এই অর্থ দিয়ে প্রাথমিকভাবে শ্রীলঙ্কা তাদের সংকট সামলাতে পারবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনটি বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে সতর্ক করে দিয়েছেন। এই তিন শর্তের আওতায় শ্রীলঙ্কাকে কর-ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে, দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে হবে এবং দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
শ্রীলঙ্কা গত এপ্রিলে দেউলিয়া হয়ে যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটি ৭০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়। অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে বেলআউট ঋণ নেয়ার আবেদন করে। এর পূর্বশর্ত হিসেবে বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। শ্রীলঙ্কার জ্বালানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির এই ঘোষণা দেন।
দেশটিতে গত বছরও ৭৫ শতাংশ বেড়েছিল বিদ্যুতের দাম। ফলে ইতোমধ্যে গত বছরের তুলনায় জানুয়ারিতে ৫৪ শতাংশ বেশি মূল্যস্ফীতি ও ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত আয়করের বোঝায় চরম দুর্দশায় আছেন দেশটির জনগণ। বিশ্লেষকদের মতে, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। সর্বশেষ এই উদ্যোগে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দেন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ