24 C
আবহাওয়া
১১:২০ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বিভিন্ন দেশে দূতাবাস ও হাইকমিশনে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত

বিভিন্ন দেশে দূতাবাস ও হাইকমিশনে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি

প্রবাস ডেস্ক: বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ পালিত হয়েছে।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, জেদ্দার উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪(২১ ফেব্রুয়ারি ) কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে উদ্‌যাপিত হয়েছে।

সূর্যোদয়ের অব্যবহিত পরেই জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। ৫২’র ভাষা আন্দোলনসহ সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-ছাত্র, আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কোপেনহেগেন (ডেনমার্ক)

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ উদ্দীপনায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।

 

২১ ফেব্রুযারি ২০২৪ ডেনমার্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এ. কে. এম. শহীদুল করিম জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। পরে দূতাবাস মিলনায়তনে কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের উপস্থিতিতে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়।

 

সন্ধ্যায় দূতাবাস মিলনায়তনে একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ডেনমার্কস্থ প্রবাসী বাংলাদেশি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন স্বাধীকার আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত এবং ভাষা আন্দোলনের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিরা আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বক্তাগণ তাদের আলোচনায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিভিন্ন দিক ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।

ইস্তাম্বুল (তুরস্ক)

       তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করেছে।

২১ ফেব্রুযারি ২০২৪ জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু করেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নূরে-আলম।দিবসটি উপলক্ষ্যে কনসাল জেনারেল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ এবং শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে ইস্তাম্বুলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং তুরস্কের মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনার শুরুতে ভাষা শহিদদের স্মরণে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা শেষে একুশের গান পরিবেশন ও কবিতা পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও বিশ্বশান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

নেদারল্যান্ড :

নেদারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাচীন লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তৃতীয়বারে মতো যৌথভাবে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (২১ ফেব্রুযারি ২০২৪) উদ্‌যাপন করেছে।

দূতাবাসের এ আয়োজনে ২০ টি দেশ সহআয়োজক হিসেবে যোগদান করে। চীন, ভারত, ইতালি, ইয়েমেন, পুয়ের্তোরিকো, ইউক্রেন, স্পেন, কসোভো, বলিভিয়া, মরক্কো প্রভৃতি দেশের শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় গান, কবিতা, যন্ত্রসংজ্ঞীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন। বিভিন্ন ডাচ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও ডাচ ভাষায় বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।

দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব, বহুভাষাতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন ইউনেস্কো-নেদারল্যান্ডের চেয়ারম্যান ক্যথলিন ফেরিয়ার এবং নেদারল্যান্ডসের বৈষম্য ও বর্ণবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটির সমন্বয়ক রবিন বালদেব সিং। এছাড়া বহুভাষাতত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর আলোকপাত করেন লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ। ‘এসপ্রান্তো’ ভাষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতালিয় অধ্যাপক ফ্রেডরিকো গোবো।

রাষ্ট্রদূত, দূতাবাস পরিবার, নেদার‌ল্যান্ডসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা দি হেগ শহরের
প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্থায়ী শহিদমিনারেপুষ্পস্তবকঅর্পণেরমাধ্যমেভাষাশহিদেরস্মৃতিরপ্রতিশ্রদ্ধাজানান। অনুষ্ঠানে ডাচ-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতণ কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং নেদার‌ল্যান্ডসের বিভিন্ন থিংক-ট্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অটোয়া :

কানাডার অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে মহান শহিদ দিবস ওআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস(২১ ফেব্রুযারি ২০২৪) পালন করেছে।গতকাল ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার দেওয়ান হোসনে আইয়ুব হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতে বাংলাদেশ হাউজে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করারমধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং একমিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা, দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। বাণী পাঠের পর ভাষা আন্দোলনের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অতঃপর ৫২ এর ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলের বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিগণ এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

নিউইয়র্ক :

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল গতকাল কনস্যুলেট ভবনে এবং নিউইয়র্ক কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির সহযোগিতায় কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ (২১ ফেব্রুযারি ২০২৪)  উদ্‌যাপন করে। এ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক স্টেটের সিনেটর ও এসেম্বলি মেম্বার, বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল ও বিদেশি কুটনীতিকগণ অংশগ্রহণ করেন। এসময় বিদেশি অতিথিবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম ও কমিউনিটি সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম পর্বে কনস্যুলেটে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি প্রামাণ্যচিত্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অমর একুশের কালজয়ী গানের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদামহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ৫২’র সকল ভাষা শহিদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদ সদস্য, ৭১-এর সকল শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

দ্বিতীয় পর্বে কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, জ্যামাইকা’তে ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ও ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয় যা দর্শকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

উল্লেখ্য, কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন । এছাড়াও তিনি সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত কুইন্স প্যালেসে অস্থায়ী শহিদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

টরন্টো (কানাডা) :

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, কানাডার টরন্টোতে গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (২১ ফেব্রুযারি ২০২৪ )পালন করা হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহরে ডেন্টোনিয়া পার্কে স্থাপিত শহিদ মিনারে ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয় এবং বাংলাদেশ হাউজে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়।

আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের অংশগ্রহণে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ভাষা শহিদদের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ, ভিডিও তথ্যচিত্র পরিবেশন ও বক্তব্য উপস্থাপন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিগণ বাঙালি জাতির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা শহিদদের ও ভাষা আন্দোলনের অবদানের ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন। শেষে জাতির পিতা ও সকল ভাষা শহিদদের বিদেহী আত্মার শান্তি এবং বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রগতি, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

 

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন

২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে টানা ৮ম বারের মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ, অস্ট্রিয়া, বাহরাইন, বলিভিয়া, রোমানিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্থায়ী মিশনসমূহ, জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও ইউনেস্কো এর সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস (Dennis Francis)।

এ বছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানটিতে বহু ভাষার ব্যবহারে সমৃদ্ধ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি, বাহরাইন, বলিভিয়া, রোমানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রিয়া, ভারত, হাঙ্গেরি, পাপুয়া নিউগিনি এবং তানজানিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি/রাষ্ট্রদূতগণ, জাতিসংঘ ও ইউনেস্কো-এর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের একজন প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২০২৪ এর মূল প্রতিপাদ্য- ‘বহু ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা; প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞান চর্চার স্তম্ভ’- এর ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষার পাশাপাশি বাংলা, হিন্দি ও রোমানিয়ান ভাষায় প্রদত্ত বক্তব্য ভাষান্তর করা হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির শহিদগণ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত মুহিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবটি পুনর্ব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও অন্যান্য বক্তাগণ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপনে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। মাতৃভাষার জন্য বিশেষ একটি দিন নির্ধারণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তাঁরা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, কূটনীতিকগণ, জাতিসংঘ সচিবালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের পূর্বে সকালে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপনের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধির নেতৃত্বে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ মিশনে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানটিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যবৃন্দ এবং মহান একুশের ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

মেক্সিকো :

মেক্সিকো সিটিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েমহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  উদ্‌যাপন করেছে।

এ উপলক্ষ্যে ২১ ফেব্রুযারি ২০২৪ দূতাবাস প্রাঙ্গণেরাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। দিবসটিউপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী , পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর, ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনপূর্বক একমিনিট নীরবতা পালন, দিবসটি উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যচিত্র প্রদর্শন, দেশের শান্তি ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

দূতাবাস ২০শে  ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট (আইপিএন)-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একটি সেমিনারের আয়োজন করে। এছাড়া, মেক্সিকো রাজ্যের নেপান্তলার সরহুয়ানা মিউজিয়াম প্রাঙ্গণে শহিদ মিনারে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাগণসহ নেপান্তলার মেয়র আবেলার্দো  রড্রিগেজ গার্সিয়া, সরহুয়ানা মিউজিয়ামের পরিচালক হুডিথ পেনইয়া,নেপান্তলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সহায়তা ও ভলকানো ভ্যালির মহাপরিচালক ডায়ানা এডনা রড্রিগেজসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গেরউপস্থিতিতেএকুশের প্রথম প্রহরে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং একমিনিট  নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মেক্সিকো সিটিস্থ ‘লসপিনোস কালচারাল কমপ্লেক্সে’ মেক্সিকো  সরকারের জাতীয় আদিবাসী ভাষা ইনস্টিটিউট (ইনালি),  ফেডারেল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং আদিবাসী জনগণের জন্য জাতীয় ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত ‘সকল ভাষার প্রতি ন্যায়বিচার’ শীর্ষক একটি সেমিনারে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি ভাষাগত সমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের ভূমিকা পুনর্ব্যক্ত করেন। সেইসাথে বিশ্বব্যাপী বিলুপ্ত ও হারিয়ে যাওয়া সকল ভাষা সংরক্ষণ এবং ভাষাগত ন্যায়বিচারের প্রতি বিশ্বব্যাপী সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ