বিএনএ, চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন ও বাংলা বিভাগের নিয়োগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেইসাথে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করে জনমতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার আহবান জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯৪ সালের ১৮ অগাস্টে অনুষ্ঠিত ২৮৩তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগে/ইনস্টিটিউটে কোনো শিক্ষকের পদ খালি হওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালক, পরিকল্পনা কমিটির মাধ্যমে পদটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রারকে অনুরোধ না করলে সেই ক্ষেত্রে উপাচার্যকে পদটির বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে তাগাদাপত্র দেয়ার পরও বাংলা ও আইন বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি থেকে সুপারিশ না করায় ওই ক্ষমতাবলে উপাচার্য এই দুই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অতীতেও বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, ‘আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরুর আগে (১৭ ডিসেম্বর) উপাচার্য দপ্তরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্বে থাকা কতিপয় শিক্ষক অনুপ্রবেশের মাধ্যমে হট্টগোল সৃষ্টি করে দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ, যা দৃষ্টিকটুও বটে। কতিপয় শিক্ষক এ সময় আগত প্রভাষক প্রার্থীদের অপেক্ষমান কক্ষে অবস্থান করে তাদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন এবং ভয়ভীতিও প্রদর্শন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির কতিপয় সদস্যের এহেন আচরণ শিক্ষক সুলভ আচরণের পরিপন্থি। সংঘটিত এ ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত, অনভিপ্রেত ও আইনসঙ্গত নয় বলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলা বিভাগে ‘যোগ্যতা শিথিল করে’ প্রভাষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের যে খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ ‘কলা অনুষদ কর্তৃক নির্ধারিত সিজিপিএ এর ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সঙ্গে ১৯৭৩ এর অ্যাক্টকে সমুন্নত রেখে প্রচলিত বিধিবিধান মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সু-শাসন নিশ্চিত করে অ্যাকাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন তরান্বিত করে চলেছে। কেউ কেউ তাতে ‘ঈর্ষান্বিত হয়ে’ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে উপাচার্য দপ্তরে প্রবেশ করে ‘আপত্তিকর ঘটনা ঘটিয়েছে’ মন্তব্য করা হয়েছে ব্যাখ্যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এ ধরনের ‘বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত’ সংবাদ পরিবেশন করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত রোববার আইন ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে তিন দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চবি শিক্ষক সমিতি। বিতর্কিত এ নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ প্রতীকী অনশন পালন করবে শিক্ষক সমিতি।
বিএনএ/ সুমন, এমএফ