বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর । আজ থাকছে কক্সবাজার-২ আসনের হালচাল।
কক্সবাজার-২ সংসদীয় আসনটি কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯৫ তম আসন।
লবণ, চিংড়ি ও মিষ্টি পান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত মহেশখালী। কুতুবদিয়া দ্বীপের মানুষের জীবন-জীবিকাও লবণ ও মাছ চাষকেন্দ্রিক। কিন্তু এখন পাল্টেছে মহেশখালীর দৃশ্যপট। মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, এলএনজি স্টেশন, সিঙ্গেল মুরিং জ্বালানী পাইপ লাইন, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্কসহ নানা উন্নয়নে বিশ্ব অর্থনীতিতেও নাম ছড়িয়েছে। এটি এখন মিনি সিঙ্গাপুরে পরিণত হয়েছে।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯ শত ৪৮ জন। ভোট প্রদান করেন ৮১ হাজার ৯ শত ৬ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাকশালের মোঃ ইসহাক বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৫ হাজার ৭ শত ২৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতের শফি আলী। দাড়িঁ পাল্লা প্রতীকে তিনি পান ২৩ হাজার ৩ শত ৪৫ ভোট ।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ১ শত ৯ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৪ হাজার ৪ শত ৪৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সিরাজুল মোস্তফা। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩২ হাজার ৪ শত ৪৩ ভোট।
২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১৩ হাজার ৫ শত ৯০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ১ শত ১৯ জন। নির্বাচনে বিএনপির মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩ হাজার ৫ শত ৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ফরিদুল ইসলাম। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৯ হাজার ১ শত ৯০ ভোট।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৫ হাজার ৮ শত ৫ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫ শত ৪৮ জন। নির্বাচনে জামায়াতের হামিদুর রহমান আযাদ বিজয়ী হন। দাড়িঁ পাল্লা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪ হাজার ২ শত ৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আনসারুল করিম। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮৬ হাজার ৯ শত ৯৪ ভোট।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ১ শত ৭৮ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭ শত ২৩ জন।
নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৯ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক, লাঙ্গল প্রতীকে মো: মোহিবুল্লাহ, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জসিম উদ্দিন, হারিকেন প্রতীকে মুসলিম লীগ এর মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ , কুলা প্রতীকে বিকল্পধারার শাহেদ সরওয়ার ,চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান,মোমবাতি প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্ট এর আবু ইউসুফ মুহাম্মদ মনজুর আহমদ ,মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আনসারুল করিম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ১৩ হাজার ৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ । আপেল প্রতীকে তিনি পান মাত্র ১৮ হাজার ৫ শত ৮৭ ভোট।
কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ,সপ্তম ও অষ্টম সংসদে বিএনপি, নবম সংসদে জামায়াত, পঞ্চম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কক্সবাজার-২ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজার-২ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪৮.১৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩১.৪১%, বিএনপি ২৫.১১%, জাতীয় পার্টি ৫.৪৫%, জামায়াত ইসলামী ২৮.৫০% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৯.৫৩% ভোট পায়।
১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৬৯.৮৪% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৯.৭৬%, বিএনপি ৪০.৭৭%, জাতীয় পার্টি ৫.৩১%, জামায়াত ইসলামী ২০.০৫%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৪.১১% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭১.৬৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩২.১৩%, ৪ দলীয় জোট ৬৭.৬০%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.২৭% ভোট পায়।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৫.৭১% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৪৪.৯৫%, ৪ দলীয় জোট ৫৩.৮৭%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.১৮% ভোট পায়।
কক্সবাজার-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক । তিনি আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়িতে এক জনসভায় আশেক উল্লাহ রফিককে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সারাদেশে ৩০০ আসনের মধ্যে শুধু আশেক উল্লাহ রফিককে তফসিল ঘোষণার আগে প্রকাশ্যে জনসভায় পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ।
তারপরও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, পরিবেশ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আনছারুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, মহেশখালী উপজেলা আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক কালারমার ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ, শাপলাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: ওসমান গণি। সম্ভাব্য ৭ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনই মহেশখালী উপজেলার।
বিএনপি ইতোমধ্যে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহার করে লাগাতর হরতালের ডাক দিয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনার পরদ নিচের দিকে নেমে আসছে। নির্বাচনে অংশ নিলে সেইক্ষেত্রে মনোনয়ন চাইবেন বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ, সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপি‘র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি‘র সভাপতি জালাল আহমেদ, মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর ছিদ্দিক, তার ছোট ভাই জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আতা উল্লাহ বোখারী।
জামায়াত ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহার করেনি। তবে বিএনপির ডাকা হরতালের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। নিবন্ধনহীন দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে হামিদুর রহমান আযাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী বা সমমনা ইসলামী কোন দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচন করবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে।
এছাড়া জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মনোনয়ন চাইবেন জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ন আহবায়ক মহেশখালীর মাহমুদুল করিম,মহেশখালী উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এডভোকেট সাহাব উদ্দীন, জেলা যুগ্ন আহবায়ক ও কুতুবদিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সাবেক বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আ.ন.ম শহীদ উদ্দীন ছোটন।
তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কতুবদিয়া) আসনটি একক কোন রাজনৈতিক দলের ঘাটি নয়। ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাকশালের মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ ও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট থেকে মনোনয়নে ছিটকে পড়েন আলমগীর ফরিদ। তাঁর পরিবর্তে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ মনোনয়ন পান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিশিষ্ট পরিবেশবিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিমকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেননি। ফলে আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন । ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য হন তিনি।
কক্সবাজার-২ আসনে একাদশ সংসদে অন্যতম আর্কষণ ছিল চাচা ভাতিজার লড়াই। আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিকের সঙ্গে তাঁর চাচা সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী রাতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ব্যালটে সিল দেয়ার অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন। ফলে ভোটারা চাচা-ভাতিজার লড়াইটি উপভোগ করতে পারেনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বিএনপি নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহার করে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ভাতিজা ওয়াকওভার পেতে যাচ্ছে এমনটাই মনে করছেন এলাকার ভোটাররা।
স্বাধীনতার পর কতুবদিয়ার মানুষ বিদ্যুৎ-সংযোগ পেয়েছে। আলোকিত হয়েছে অবহেলিত দ্বীপ কুতুবদিয়া। এ কারণে এবার ভোটারদের মনও আলোকিত। ভোটারদের কাছে পাবেন এমন প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগে নেতা-কর্মীরা। একই অবস্থা মহেশখালীতেও। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেঘা প্রকল্পের মাধ্যমে অবহেলিত এই জনপদের উন্নয়নতুলে ধরে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি ভেতরে-ভেতরে হারানো আসন পুনরুদ্ধারে তৎপর। কিন্তু বিএনপিতে রয়েছে গ্রুপিং। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ ও আলমগীর ফরিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে ধস নেমেছে। এই আসনে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম কাগজে কলমে। জামামায়ত ইসলামীর সাংগঠনিক তৎপরতা দৃশ্যমান না হলেও তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। যা নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ধারণে বড় ভূমিকা থাকবে। এছাড়া আঞ্চলিক ভোটও নির্বাচনে জয় পরাজয়ের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের ২৯৫ তম সংসদীয় আসন (কক্সবাজার-২) আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে লড়াই হবে। অন্যদিকে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে আওয়ামী লীগ খুব সহজে নির্বাচনে বিজয়ী হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনএ/শাহীন,শাম্মী, রেহানা, ওজি,ওয়াইএইচ