21 C
আবহাওয়া
১২:১৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » তালেবানের আফগানিস্তানে প্রসূতি চিকিৎসায় হ-য-ব-র-ল

তালেবানের আফগানিস্তানে প্রসূতি চিকিৎসায় হ-য-ব-র-ল

আফগান মায়েদের অবর্ণনীয় কষ্ট

বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক : তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করার পর দেশটিতে আর্থিক দূরাবস্থার পাশাপাশি প্রশাসনে চলছে স্থবিরতা। সরকারি ও বিদেশি সহায়তায় পরিচালিত সব হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার অবস্থা হ-য-ব-র-ল। নেই বিদ্যুৎ, ওষুধ, পানি ও খাবার। তীব্র প্রসব  যন্ত্রনায় ভোগা নারীকে হাসপাতালে নেবার গাড়ির সংকট।দেশটির অধিকাংশ মানুষের চাকরি, আয় নেই।  মোবাইল ফোনের টর্চ লাইটের আলোতে হাসপাতালের লেবার রুমে সন্তান প্রসবের ঘটনা চলছে। সূত্র:বিবিসি

আফগানিস্তানে প্রসূতি চিকিৎসা

মিডওয়াইফ আবিদা জানালেন, হাসপাতাল পরিচালনার সব টাকা জব্দ করা। বিদ্যুৎ সংকটে হাসপাতাল থাকছে অন্ধকারে। তেলের অভাবে চলছে না হাসপাতালের জেনারেটর,এ্যাম্বুলেন্স।

আফগানিস্তানের পূর্বে নানগারহার প্রদেশের একটি ছোট হাসপাতালে বাচ্চা জন্ম দেয়ার কিছু সময়পর রাবিয়া তার নবজাতককে জড়িয়ে ধরেছে।তিনি বলেন, “এটি আমার তৃতীয় সন্তান, কিন্তু এবারের অভিজ্ঞতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা ছিল ভয়াবহ কষ্টের “।

তাকে কোন ব্যথা উপশম কোন ওষুধ এবং কোন খাবার দেয়া হয়নি।তখন হাসপাতালের বাইরে ৪৩ডিগ্রী তাপমাত্রা। প্রচণ্ড গরম।ছিল না হাসপাতালে বিদ্যুত। জেনারেটর থাকলেও তেলের অভাবে চালানো যায় নি। পানিতে গোসল করার মত ঘামে ভিজে গিয়েছিল তার শরীর।

আরও পড়ুন :

আফগানিস্তানে বালিকাদের স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত অনৈসলামিক-ইমরান খান

ধাত্রী আবিদা দিবারাত্র এই হাসপাতালে নিরলসভাবে সন্তান প্রসবের কাজ করে যাচ্ছেন।তার মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতে অন্ধকার রুমে রাবেয়ার সন্তান প্রসব করানোর কাজ সামলান।

আবিদা জানালেন,”এটা আমার চাকরি জীবনে সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতাগুলির মধ্যে একটি। এটা খুব বেদনাদায়ক । কিন্তু তালেবানদের দেশ দখল নেয়ার পর থেকে হাসপাতালে প্রতি রাতে এবং প্রতিদিন আমাদের এই গল্পই চলছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, আফগানিস্তানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার রয়েছে।, প্রতি লাখে ৬৩৮ জন মহিলা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়।

Afghan mother and baby with doctor. Photo collage illustration from photographs courtesy Getty Images

আবিদা বলেন,টাকার অভাবে হাসপাতালে ওষুধ,বিদ্যুত সংকট চরমে। তেলের জন্য হাসপাতালের জেনারেটর চলে না। এ্যাম্বুলেন্স চলে না। এখন চরমভাবে চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। কয়েকরাত আগের ঘটনা। এক নারী তীব্র প্রসব যন্ত্রনায় ভুগছিলেন।কোন গাড়ি না পেয়ে হাসপাতালে ফোন দেন এ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে। আমরা তাকে কোনভাবে একটা অটোরিক্সা নিয়ে হাসপাতালে আসতে বলি।

“যখন সন্তান সম্ভাবা নারী অবশেষে একটি কার যোগাড় করতে সক্ষম হন, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তিনি গাড়িতে সন্তান জন্ম দেন এবং কয়েক ঘণ্টার জন্য অজ্ঞান ছিলেন কারণ তিনি প্রচণ্ড ব্যথা এবং প্রচণ্ড গরমে ছিলেন। আমরা ভাবিনি যে সে বেঁচে থাকবে। বাচ্চাটিও খুব বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল এবং তাদের উভয়ের জন্য আমাদের কিছুই করার ছিল না, “আবিদা আবেগজনিত কন্ঠে জানাল।

আরও পড়ুন : আফগানিস্তানকে চীনের নি:শর্ত ব্যাপক খাদ্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি

সৌভাগ্যক্রমে ওই মহিলার নবজাতক কন্যা বেঁচে যান। জাতিসংঘের অনুদানপ্রাপ্ত হাসপাতালে তিন দিন থাকার পর সুস্থ হলে মহিলাটিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

আবিদা যার কথা শুনলেন,এতক্ষণ । তিনমাস ধরে বেতন পান না। তবু হাসপাতালে টানা কাজ করে যাচ্ছেন। বেতন না পেলেও আরও দু মাস সে কাজ চালিয়ে যাবে। আবিদা বললেন, আমার দেশের(আফগানিস্তান) এই রোগীগুলো খুব গরীব। অসহায়।তাদের জন্য মায়া হয়।

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক নাটালিয়া খানম বলেন, “এখন খুব হতাশার মধ্যে আছি। আমি নারীদের চিকিৎসা সুবিধা নিয়ে চিন্তিত।”  তিনি বলেন, আমাদের তহবিল দরকার।” “গত কয়েক সপ্তাহের নাটকীয় ঘটনার আগেও,প্রতি দুই ঘণ্টায় প্রসবের সময় একজন আফগান মহিলা মারা যান।”

বিএনএনিউজ২৪ডটকম,এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ