বিএনএ ডেস্ক: টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত ও জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের ‘সার্বিক বৈশ্বিক’ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি জলবায়ু তহবিলের একশ’ বিলিয়ন ডলার দিতে কার্বন নি:সরণকারী দেশগুলোর প্রতি তাগাদা দেন তিনি।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ বৈঠক আহ্বান করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস।
এ বৈঠকে সংকট উত্তরণে বিশ্ব নেতাদের সামনে ৬টি প্রস্তাবও পেশ করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার প্রস্তাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তির কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানান। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক একশ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়ের ওপরও জোর দেন তিনি। এই তহবিলের ৫০ শতাংশ বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার জন্য ব্যবহার করা হবে।
বৈঠকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নতুন আর্থিক প্রক্রিয়া এবং সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লোকসান এবং বৃহৎ জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি মোকাবিলার আহ্বানও জানান তিনি।
বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, মহামারি ও দুর্যোগের দ্বৈত বিপদ মোকাবিলায় বিশেষ করে জলবায়ু-সৃষ্ট দুর্যোগের বর্ধিত পৌন:পুনিকতা আক্রান্ত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রয়োজন। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে তাদের অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় সহায়তা করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো বৈশ্বিক গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনে সবচেয়ে কম অবদান রাখে, কিন্তু তারাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী।
সম্প্রতি আইপিসিসি রিপোর্টে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে ভয়ানক চিত্র তুলে ধরার কথা উল্লেখ শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যদি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি পায় ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশ অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
‘সবুজ প্রবৃদ্ধি’, অবকাঠামোগত স্থিতিস্থাপকতা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিয়ে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জলবায়ু ভালনারাবলিটি থেকে জলবায়ু রেজিলেন্স, জলবায়ু রেজিলেন্স থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি-২০ চেয়ার শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের মূল লক্ষ্য ক্লাইমেট ভালনারেবল দেশগুলোর স্বার্থ অগ্রাধিকার দেয়া।
বিএনএনিউজ/আরকেসি