ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা ২৫টি জেলার আড়াই হাজারের বেশি ‘গায়েবি’ মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি, ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আইন ও আদালত সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, গত ১৫ বছরে অসংখ্য ‘গায়েবি’ মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগের পরপরই এসব মামলা শনাক্তের কাজ শুরু হয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর আইন কর্মকর্তাদের অনেকেই আদালত ত্যাগ করেন। এরপর নতুন করে ৪ হাজার সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় এবং বিগত সরকারের আমলে দায়ের করা হয়রানিমূলক ও ‘গায়েবি’ মামলাগুলো চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, “এ উদ্যোগ নিতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে আমরা ২৫টি জেলায় আড়াই হাজারের বেশি ‘গায়েবি’ মামলা চিহ্নিত করেছি। এর বাইরেও আরও মামলা থাকতে পারে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।”
গায়েবি মামলা শনাক্তের মানদণ্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যেসব মামলা পুলিশ দায়ের করেছে, বিস্ফোরক আইন, অস্ত্র আইন বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা হয়েছে এবং যেখানে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো বিশেষ নজরে রাখা হয়েছে। আমরা দেখেছি, অধিকাংশ মামলা বিরোধী দলের আন্দোলনের আগে-পরে করা হয়েছে, বিশেষ করে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের সময়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে আড়াই হাজারের বেশি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে।”
তিনি জানান, বিবাহ নিবন্ধনে আরোপিত অযৌক্তিক কর ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। সাইবার আইন সংশোধন বা প্রত্যাহার নিয়ে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ওই আইনে দায়ের করা ৩৩২টি মামলার মধ্যে ১১৩টি ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং বাকি মামলাগুলো দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় অযোগ্য বিচারক নিয়োগ বন্ধে এবার যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে। নতুন আইন অনুযায়ী জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠিত হবে, যা বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।
এ ছাড়া, বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনে আইন প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, ৩৬ ধরনের নথি সত্যায়নের কার্যক্রম গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে সম্পূর্ণরূপে অনলাইন হওয়ায় জনগণ সময় ও অর্থ সাশ্রয় করছে।
বিএনএনিউজ২৪, এসজিএন