বিশ্ব ডেস্ক, ঢাকা: শেষবারের মতো হোয়াইট হাউস ছেড়ে যান আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে হামলার আশংকায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিদায় নিতে পারেননি গত চার বছরের শীর্ষ আলোচিত প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে তার ব্যক্তিগত সকল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ রয়েছে। তাই তিনি হোয়াইট হাউস থেকে সরকারি অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা যা করতে এসেছিলাম তা করেছি। আমি কঠিন লড়াই, সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করেছিলাম।’
ট্রাম্প তার সময়ের বিভিন্ন শান্তি চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘দশকের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি গর্বিত যেকোনো নতুন যুদ্ধ শুরু করিনি।’
ক্যাপিটল হিলে হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: ‘ক্যাপিটল আক্রমণে সকল আমেরিকান আতঙ্কিত হয়েছিলো। এটা কখনই সহ্য করা যায় না।’
এদিকে, ক্ষমতা ছাড়ার আগে ১৪০ জনকে ক্ষমা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দণ্ডিত এসব ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন তার সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন, যার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্পের এই ক্ষমা ঘোষণা এল।
হোয়াইট হাউসের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সব মিলিয়ে ৭৩ জনকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৭০ জনের সাজা কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
ক্ষমা ঘোষণার ব্যাপারটি হোয়াইট হাউস থেকে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের জন্য একটি নিয়মিত ঘটনা।
ক্ষমা ঘোষণা করা হলে তার বিরুদ্ধে থাকা সকল ফৌজদারি সাজা বাতিল হয়েছে যায়। অন্যদিকে তিনি কারাদণ্ড কমিয়েও দিতে পারেন।
ফেডারেল মামলার ক্ষেত্রে ক্ষমা করার জন্য প্রেসিডেন্টের অসীম ক্ষমতা রয়েছে। তবে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের জন্য কোনো ক্ষমা ঘোষণা করেননি ট্রাম্প।
সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অনেকের জন্যই ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নির্বাচনী প্রচারণা ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্ট, দীর্ঘদিনের সহযোগী রজার স্টোন এবং জামাতা জ্যারেড কুশনারের পিতা চার্লস।
ট্রাম্পের ক্ষমা পাওয়া উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন স্টিভ ব্যানন, তিনি ছিলেন ট্রাম্পের ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় অন্যতম প্রধান কৌশলবিদ এবং উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার জন্য তহবিল সংগ্রহে প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের আগস্ট মাসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেছেন, আরও তিনজনের সঙ্গে মিলে ব্যানন তহবিল থেকে লাখ লাখ ডলার সরিয়েছেন। তবে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লিল ওয়েইন, যার আসল নাম ওয়েইন কার্টার। গত বছর অস্ত্র সংক্রান্ত ফেডারেল অভিযোগে তার সাজা হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপরাধী সংক্রান্ত সংস্কার কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে তার একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন।
কোডাক ব্ল্যাক, যার আসল নাম বিল কে কাপরি, তার বিরুদ্ধেও অস্ত্র সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে। তার তিন বছর ১০ মাসের সাজা হয়েছিল।
ডেট্রয়েটের সাবেক মেয়র কাওমি কিলপ্যাট্রিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তার ২৮ বছর সাজা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মেয়র থাকার সময় চাঁদা ও ঘুষ গ্রহণ, হুমকি দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
গুগলের সাবেক প্রকৌশলী অ্যান্থনি লেভানডোস্কি প্রতিষ্ঠানের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি সংক্রান্ত প্রকল্পের তথ্য চুরি করার কথা স্বীকার করেছিলেন। তার ১৮ মাসের সাজা থেকে পূর্ণ ক্ষমা পেয়েছেন।
বিএনএ/এমএইচ