28 C
আবহাওয়া
৯:৩০ পূর্বাহ্ণ - অক্টোবর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » গেরিলা যুদ্ধের ডাক দিবে আওয়ামী লীগ?

গেরিলা যুদ্ধের ডাক দিবে আওয়ামী লীগ?

গেরিলা যুদ্ধের ডাক দিবে আওয়ামী লীগ?

বিএনএ, ঢাকা: গণ আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় প্রবাসী সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন খোদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ। ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় ‘ভাষা সাহিত্য চর্চা একাডেমি’ নোয়াখালীর আয়োজনে ‘নজরুল সাহিত্যে বৈষম্যবিরোধী চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা এবং শহীদদের পরিবারের আর্থিক অনুদান ও দোয়া অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন।

সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেছেন, ‘কুমিল্লার একটি স্থানে নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী অঞ্চলের আওয়ামী লীগ নেতারা একত্রিত হচ্ছেন সভা করার জন্য। ভারতের আগরতলায় তারা একটি সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেই সমাবেশ থেকে তারা একটি প্রবাসী সরকারের ঘোষণা দিতে চায়। শেখ হাসিনা ওই সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আবদুল হান্নান মাসুদ আরও বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা এখন সাপের মতো বসে বসে অনেকটা বিশ্রাম নিচ্ছে। দাঁতকে আরও বেশি বিষাক্ত করছে। তারা আমাদের মানচিত্র ও পতাকার ওপরে বিষাক্ত ছোবল দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাদের অনেকে তাদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার জন্য সাহায্য করছে বলে অভিযোগ করেন এই সমন্বয়ক।

কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ এমন তথ্য প্রকাশ করার দুই ঘন্টা পর শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকার টাউন হল মাঠে মশাল মিছিলের আগে এক সমাবেশে প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার গঠন করতে তৎপর বলে উল্লেখ করেছেন।

‘কুমিল্লার মাটি ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদী শক্তির একত্র হওয়ার অপচেষ্টার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার সমাবেশ ও মশাল মিছিল’ নামের এই কর্মসূচির আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদের রূপকার খুনি শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। পালিয়ে গিয়েও খুনি হাসিনা দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। এরই মধ্যে আমরা খবর পেয়েছি, কুমিল্লার পার্শ্ববর্তী সীমান্ত ত্রিপুরায় ফ্যাসিবাদের গংরা জমায়েত হওয়ার অপচেষ্টা করছেন। আমরা ফ্যাসিবাদের গংদের স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, তাদের ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা কখনোই বাংলার মাটিতে সফল হবে না। ফ্যাসিবাদের দালাল যারা রয়েছে—ছাত্রলীগ, যুবলীগ, টোকাই লীগ, বাংলাদেশের কোথাও পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করলে তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হওয়ার ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দেওয়া হবে না।’

দুইজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নোয়াখালী ও কুমিল্লায় দুই ঘন্টার ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার গঠন করার এমন আগাম তথ্য প্রকাশ করায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারাদেশের রাজনৈতিক সচেতন মানুষের মধ্যে নতুন করে কৌতুহল শুরু হয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের প্রবাসী সরকার নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম প্রবাসী বা অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৭ এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় বর্তমান মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।

প্রশ্ন ওঠেছে, ভারতের সহায়তায় আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার গঠন করে আদৌ কী অন্তর্বর্তীকালীন ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে সশ্রস্ত্র গেরিলা যুদ্ধের ডাক দিবেন? নাকি আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দমন করার জন্য এমন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে? সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবাসী সরকার গঠনের বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

বিএনএনিউজ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী/ বিএম/হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ