বিএনএ,ডেস্ক: প্রতিদিন প্রতিযোগিতা দিয়ে দেশজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে অস্বাভাবিক ভাবে। শাকসবজি, মাছ, ডিমসহ কৃষিপণ্যের বাজার চড়া। অন্তর্বর্তী সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সড়কপথে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই পণ্যের দামের লাগাম টেনে ধরতে ট্রেনে পণ্য পরিবহনের পরিকল্পনা করছে সরকার।
দেশের ১৫টি অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য পরিবহন করবে রেলওয়ে। তিনটি স্পেশাল ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় সবজি, ফলমূল, মাছ, ডিম সরবরাহ করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) থেকে ট্রেনে করে শাকসবজি, মাছ, ডিম ও ফল পরিবহন করা হবে। খুলনা, রাজশাহী ও পঞ্চগড় থেকে সপ্তাহে এক দিন চলবে স্পেশাল পারসেল ট্রেন। রেলওয়ে বলছে, এতে মধ্যস্বত্বভোগী ও আড়তদারের দৌরাত্ম্য কমবে। পাশাপাশি কমবে দাম ও রাজধানীবাসী পাবে টাটকা সবজি।
রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী জানিয়েছেন, রেলের ভাড়া তুলনামূলক কম, সহজে এবং পণ্যের গুণগত মান ঠিক রেখে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব। সেই লক্ষ্যে আপাতত খুলনা, রাজশাহী, পঞ্চগড় এই রুটগুলোকে নির্ধারণ করা হয়েছে। সপ্তাহে পণ্য নিয়ে ট্রেন চলাচল করবে এক দিন। চাহিদা বাড়লে ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে। ভাড়া ঠিক করা হয়েছে কেজিপ্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে দুই টাকা।
সরদার সাহাদাত আলী আরও জানান, সাড়ে ১২টা বা ১টার মধ্যে ট্রেনগুলো যাতে তেজগাঁও পৌঁছে যায়, সেভাবে সময় নির্ধারণ করা হবে। কেউ যদি ঢাকা পর্যন্ত মালামাল বহন করতে চায়, তাহলে সেটিও করা সম্ভব।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫টি অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ট্রেনে করে চাহিদাসম্পন্ন এলাকায় পৌঁছে দেয়া হবে। ছয়টি নিয়মিত দ্বিতীয় শ্রেণীর ট্রেনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি, ফলমূল, মাছ, ডিমসহ সব ধরনের কৃষিপণ্য সরবরাহ শুরু করবে রেলওয়ে।
এসব ট্রেনে লাগেজ ভ্যান সংযোজন করতে নির্দেশ দিয়েছে পূর্বাঞ্চলের রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ। ট্রেনগুলো হলো ঢাকা মেইল (নং-১), চট্টগ্রাম মেইল (নং-২), নোয়াখালী এক্সপ্রেস (১২), ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (৩৭ ও ৩৮) এবং ভাওয়াল এক্সপ্রেস (৫৬)। চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে কৃষিপণ্য সরবরাহের জন্য বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, ট্রাকে করে গাড়ির অর্ধেক পণ্য নিলেও যে ভাড়া দিতে হয়, ট্রাকভর্তি পণ্য নিলেও একই ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু ট্রেনে নিলে পণ্য হিসাবে ভাড়া দিতে হবে, এতে খরচ কমবে।
এর আগে ২০২১ সালে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা চালু হয়নি। আম ও গরু পরিবহনেও বিশেষ ট্রেন চলেছে, কিন্তু লাভজনক হয়নি।
বিএনএনিউজ২৪/ আরএস/হাসনা/শাম্মী