বিএনএ, ঢাকা: এতক্ষণে এই ইসকন সদস্যের নাম নিশ্চয়ই মানসপটে ভেসে উঠেছে? ২০১৯ সালের ৫মে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছিলেন, তিনি নিয়মিত ইসকন মন্দিরে যেতেন। গুঞ্জন আছে, রাজনৈতিক মেধা, প্রজ্ঞা না থাকলেও ইসকন কোটায় তিনি ২০১৮ সালের কথিত রাতের ভোটে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রী পরিষদে জায়গা করে নেন। হয়ে ওঠেন বেশ ক্ষমতাশালী। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে কথায় কথায় হুমকি ধমকি দিতেন।
২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ মৌলবাদীদের ঘাড় মটকানোর কথা বলেন।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১১ জানুয়ারি ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার পঞ্চম মন্ত্রিসভায় শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তারপর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৫ জুলাই তিনি আন্দোলনকারীদের “সাচ্চা রাজাকার” বলে অভিহিত করেন। ফলে আন্দোলন আরও গতি পায়। ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর অন্য মন্ত্রী এমপিদের মতো আত্মগোপনে আছে সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী। ইতোমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর সন্তান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ইসলাম ধর্ম গ্রহণপূর্বক বৃটিশ নাগরিক এমা ক্লেয়ার বার্টনকে বিয়ে করেন।
বর্তমানে পালিয়ে থাকা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের উইকিপিডিয়ায় তার মায়ের নাম শাহেদা বেগম উল্লেখ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিনিই নওফেলের গর্ভধারিনী মা’। কিন্তু সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারির অনুষ্ঠিত নির্বাচনের যে হলফনামা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন সেখানে মায়ের নাম উল্লেখ করেছেন তার পিতা মহিউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনের নাম। নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে জমা দেওয়া জাতীয় পরিচয় পত্রে হাসিনা মহিউদ্দিন লিখা রয়েছে।
ওই সময় তার প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার সানজিদ রশিদ চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে সব ধরনের তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে মহিবুল হাসান চৌধুরীর প্রার্থীতা বাতিলের জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনে আপিল আবেদন করেন। কিন্তু তার আপিল খারিজ করে দেয় আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ ঠুটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশন।
এই ব্যাপারে ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সির ওয়েব পোর্টাল বিএনএ নিউজ টুয়েন্টিফোর ‘নওফেলের মা শাহেদা নাকি হাসিনা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করার জন্য বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কর্তৃপক্ষের ওপর নানাভাবে চাপ দেওয়া হয়।। হুমকি আসে পোর্টালটি বন্ধ করে দেওয়ার। তারপরও প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার না করে সত্য প্রকাশে অবিচল থাকে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টিফোর কর্তৃপক্ষ।
বিএনএনিউজ/ বিএম