বিএনএ ঢাকা: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে পুরনো ঢাকার হোসনি দালানে বোমা হামলা চালানো হয়। ওই সময় জেএমবির এই বোমা হামলায় দু’জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। হামলার ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন কারণে মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে। আজো মেষ করা যায়নি মামলার বিচারকাজ।ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।
২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। অভিযোগ গঠনের পর গত চার বছরের বেশি সময়ে ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে থাকা এ মামলায় সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। আগামি ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য রয়েছে।
মামলাটি সম্পর্কে সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গোলাম সারোয়ার জাকির বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে। দুই আসামি নাবালক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। বিচারের জন্য সম্পূরক অভিযোগপত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। এ কারণে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ ছিল। এরমধ্যে আবার কারোনার কারণে দু‘দফা আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় বিচার কার্যক্রম হয়নি। বর্তমানে আদালতের কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। এখন থেকে সাক্ষী নিয়মিত আদালতে হাজির করে যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির বিচার শেষ করার চেষ্টা করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এবছরই মামলাটির বিচার শেষ হতে পারে। আর আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করবেন বলে জানান প্রসিকিউটর গোলাম সারোয়ার জাকির।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মেদ বলেন, এ পর্যন্ত যতজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কেউই আসামিদের নাম বলেননি। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬১ ধারায়ও সাক্ষীরা আসামিদের নাম বলেননি, এজন্য তাদের জেরাও করা লাগেনি। তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা হয়েছে এটা সত্য ঘটনা। তবে, যাদের আসামি করা হয়েছে তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
ওই হামলায় ১৩ জঙ্গি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।অভিযানের সময় ক্রসফায়ারে মারা যায় তিন জঙ্গি । অভিযোগপত্রভূক্ত আসামিরা সবাই জেএমবির সদস্য।
আসামিরা হলেন- ওমর ফারুক মানিক, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, শাহজালাল মিয়া, চান মিয়া, কবির হোসাইন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক, আরমান ওরফে মাসুদ রানা মাসুদ ওরফে সুমন, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, আবু সাঈদ রাসেল ওরফে সোলায়মান ওরফে সালমান ওরফে সায়মন, আরমান ওরফে মনির, জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মুসায়াব ও রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব ওরফে সুমন।
আসামিদের মধ্যে আরমান, রুবেল ও কবির আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী শাহাদাৎ ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর গাবতলীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি রাজধানীর হাজারীবাগে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় অপর দুই জেএমবি কমান্ডার আবদুল বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান ও সাঈদ ওরফে হিরণ ওরফে কামাল।
বিএনএ নিউজ/আজিজুল,আরকেসি