বিএনএ,চট্টগ্রাম: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপির দুই মেরুকরণে আনোয়ারায় অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচনে জাবেদ সমর্থিত প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয় ওয়াসিকার প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ১ম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। বুধবার এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ইশতিয়াক ইমন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
এদিকে পরিষদের ১ম সাধারণ সভায় নিরাপত্তাহীনতা শঙ্কায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯ চেয়ারম্যান সভা বর্জন করেছেন। যদিও পরিষদের সদস্য সংকটের মাধ্যমে সাধারণ সভার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে এসব ইউপি চেয়ারম্যান সবাই সাবেক ভূমিমন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির অনুসারী।
যদিও ইউপি চেয়ারম্যানদের বর্জনের বিষয়ে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, আনোয়ারার ১১ইউপি চেয়ারম্যান ভোটের মাঠে আমার বিপক্ষে সরব ছিলেন। তারা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন। ওরা কখনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারেনি। তাই জনগণের সামনে আসতে ভয় পায়। যেহেতু ভোটে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে লজ্জায় মুখ দেখাবে কীভাবে! তাই নতুন নাটক সাজিয়েছে। চক্রান্তের নাটের গুরু বারশত ইউপি চেয়ারম্যান। আর চাতরী চেয়ারম্যান প্রকাশ্য জনসভায় জনগণকে পিষে মারার হুমকি দিয়েছিল। তারাই এখন নিরাপত্তার গল্প সাজায়। মানুষ এখন তাদের ভন্ডামি বুঝে গেছে।
দেখা গেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক ইমন, বরুমচড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরী ও স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেলকে শুভেচ্ছা জানান ও আগামীতে আরো ভালো কাজের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ভাইস চেয়ারম্যান এম এ মান্নান মান্না, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান চুমকি চৌধুরী।
এদিকে সভা বর্জন করার বিষয়ে উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে ২নং বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ জানান, গত ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচিত প্রার্থীর সমর্থকেরা বিভিন্নভাবে রাত বিরাতে আমাদের বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের বাড়িতে হামলা করেছে। তারা বটতলী ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নানের ওপর হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করেছে। এখনো চেয়ারম্যানদের ঘরের সামনে পরিষদের সামনে নির্বাচিত প্রার্থীর সমর্থকেরা অবস্থান করে প্রতিনিয়ত চেয়ারম্যানদের আতংকিত করছে৷ যার ফলে চেয়ারম্যানরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আজ উপজেলা পরিষদে যারা চেয়ারম্যানদের হুমকি দিচ্ছে, হামলা করেছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে সেসব লোকজন ছিলো। তাই এদের মধ্যদিয়ে সভায় উপস্থিত হওয়াটা আমরা নিরাপদ মনে করিনি। আমরা ইউএনওকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। যদি আনোয়ারায় সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসে তাহলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে আমরা আনোয়ারার উন্নয়নে কাজ করবো।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ইশতিয়াক ইমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সভায় কোন সিদ্ধান্তের বিষয়ে সদস্যদের প্রয়োজন হয়। পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত না হলেও আনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনএনিউজ/নাবিদ