বিএনএ, বিশ্বডেস্কঃ মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই কাবুলের গুরুদ্বারে জঙ্গি হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করল আইএস গোষ্ঠী। শনিবার (১৮ জুন) আফগানিস্তানের একটি গুরুদ্বারে গ্রেনেড আর মেশিনগান নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা।
রোববার (১৯ জুন) ইসলামপন্থি জঙ্গিদল আইএস-র আফগানিস্তান শাখা থেকে এক টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ দাবি করা হয়। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, এই হামলা আদতে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতি তাদের জবাব।
বরখাস্ত হওয়া বিজেপি নেত্রী নূপুরের মন্তব্যের জেরে বিতর্ক যখন ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে, ঠিক তখনই কাবুলের মন্দিরে হামলার কারণ হিসেবে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করল আইএস জঙ্গিরা।
কাবুলে হামলার স্বীকারোক্তি দিয়ে আইএস বলেছে, শনিবার সকালে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী একটি মেশিনগান ও হ্যান্ড গ্রেনেড হাতে মন্দিরে হামলা চালায়। প্রথমে সে মন্দিরের রক্ষীকে হত্যা করে এবং তারপর মন্দিরের ভেতর তাণ্ডব চালায়।
মন্দির কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলার সময় মন্দিরের ভেতর ৩০ জন ছিলেন। তালেবান যোদ্ধারা মন্দিটি রক্ষার চেষ্টা করছিল।
হামলার পরপরই তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়, হামলাকারীরা একটি গাড়ি বিস্ফোরক দিয়ে বোঝাই করেছিল, কিন্তু সেটি লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই বিস্ফোরিত হয়।
আইএস আরও দাবি করেছে, ওই সময় তাদের তালেবান সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। একটি গাড়িবোমা ও চারটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ব্যবহার হয় লড়াইয়ে।
তালেবান শাসকরা বলছে, আগস্টে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই তারা দেশকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটিতে জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানের ঝুঁকি এখনও বিদ্যমান।
শনিবার কাবুলের বিস্ফোরণের আগে শুক্রবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজের একটি মসজিদে বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ওই বিস্ফোরণে একজন নিহত ও দুইজন আহত হয়।
কাবুলে গত বছর শিখ সম্প্রদায়ের ওপর একটি বড় হামলা হয়েছিল। শিখদের দুটি মন্দিরে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ২৪ জন। এর দায় নিয়েছিল আইএস।
শনিবারের হামলাটি বিজেপি সদস্যদের মন্তব্যের জেরে ভারতের প্রতি মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মধ্যে হলো। সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান এবং ইরাকের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক পতন ঠেকাতে এখন লড়াই করছে দিল্লি।
গত ২৬ মে এক টেলিভিশন বিতর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন মুখপাত্র নূপুর শর্মা। বিজেপির দিল্লি শাখার তৎকালীন গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালও টুইটারে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। ওই মন্তব্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে নূপুর ও জিন্দালকে বহিষ্কার করে বিজেপি।
বিএনএ/এমএফ