বিএনএ ডেস্ক : বিশ্ব রাজনীতিতে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরস্পর বিপরীতমূখী। চির বৈরী এই দুই দেশ পরস্পরের সমালোচনা করে থাকে। তবে ভিতরে ভিতরে তাদের সর্ম্পক রয়েছে। এমনটি জানা গেল ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্থ হওয়ার পর। ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গীদের নিয়ে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এ হেলিকপ্টারের মডেল বেল ২১২। দুই ব্লেডের মাঝারি এই হেলিকপ্টারের আসন সংখ্যা ১৫। যার মধ্যে একজন পাইলটের আসন।
এ দিকে আল-জাজিরা অপর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের সন্ধান মিলেছে। কিন্তু ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ তার সাথে থাকা সকল সফরসঙ্গী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরনা ইন্টারন্যশন্যাল।
ওই হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্ট রাইসি ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রাহমাতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন। আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন তারা।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে প্রায় ১৫ ঘণ্টা অনুসন্ধান কাজ চালানোর পর ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। একইসঙ্গে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি।
এ দিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হেলিকপ্টারটির খোঁজ পাওয়ার পর রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে ওই হেলিকপ্টারে কেউই জীবিত থাকার লক্ষণ নেই।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর সেখানে কারও জীবিত থাকার ‘কোনও চিহ্ন’ নেই বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে। অন্যদিকে ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’। ধারণা করা হচ্ছে প্রেসিডেন্টসহ তার সফর সঙ্গীরা আগুনে অঙ্গার হয়েছে। এটি নিছক দূর্ঘটনা নাকি ইসরায়েলের নাশকতা তা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হচ্ছে। গাজা ইস্যুতে ইরান ও ইসরায়েলের যে বৈরিতা তার দিকে ইঙ্গিত করছে কেউ কেউ বলছে এই ধোঁয়াশা কাটতে আরও সময় লাগবে।
আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।
পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী