24 C
আবহাওয়া
১১:৩৭ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সন্তানের সামনে পিতাকে কুপিয়ে হত্যা,সাবেক এমপি আউয়াল গ্রেফতার

সন্তানের সামনে পিতাকে কুপিয়ে হত্যা,সাবেক এমপি আউয়াল গ্রেফতার

সন্তানের সামনে পিতাকে কুপিয়ে হত্যা,সাবেক এমপি আউয়াল গ্রেফতার

বিএনএ,ঢাকা:রাজধানীর পল্লবীতে সন্তানের সামনে প্রকাশ্যে সাহিনুদ্দিন (৩৩) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যএম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

বৃহস্পতিবার(২০ মে) গণমাধ্যমকে  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের ইন্টেলিজেন্স (গোয়েন্দা) উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

তিনি জানান,জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ১৬ মে দুপুরে মো. সাহিনুদ্দিনকে সন্তানের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার ১নম্বর আসামি এম এ আউয়াল। তাকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

এর আগে সাহিনুদ্দিন হত্যার নেপথ্যে এম এ আউয়ালের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৬ মে হত্যাকাণ্ডের পর ওই রাতেই পল্লবী থানায় আউয়ালসহ ২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের মা আকলিমা বেগম।

মামলার এজাহারে আকলিমা বেগম উল্লেখ করেছেন, গত ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক সাহিনুদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। সাহিনুদ্দিন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে সুমন ও টিটুসহ ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়। সে সময় সাহিনুদ্দিনের ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে তাকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই সাহিনুদ্দিনের মৃত্যু হয়।

নিহতের মায়ের অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করেছে। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় তাকে খুন করা হয়। পল্লবীর ডি-ব্লকে নিহত সাহিনুদ্দিনের বাসা ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর-১২ নম্বরের সিরামিকের মধ্যে এক বিঘার বেশি জমির মালিক ছিলেন নিহত যুবক মো. সাহিনুদ্দিন ও তার স্বজনরা। জমিটির কিছু অংশ দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছিলেন সাবেক এমপি আউয়ালের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাভিলি প্রপার্টি’। জমির মালিক একসময় তার জমি বিক্রির জন্য সাইনবোর্ড দেন। সে সময় জমিটি কেনার জন্য আউয়ালের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের কথাবার্তাও হয়। কিন্তু দামে বনিবনা না হওয়ায় তা বিক্রি করেন নিজমির মালিক। পরবর্তীতে জায়গাটি আউয়াল জোর করে দখল করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে নিহত সাহিনুদ্দিন ও তার ভাই মাইনুদ্দিনকে প্রায়ই হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। সবশেষ তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাও দেয়া হয়। সেই মামলায় সাহিনুদ্দিন ও তার ভাই মাইনুদ্দিন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। গত ২৭ রমজান জামিনে মুক্ত হন তারা। ঘটনার দিন (১৬ মে) জমির মীমাংসার কথা বলে সাহিনুদ্দিনকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি আউয়ালের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তিনি কম মূল্যে এই জমি কিনে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন জমির মালিকের সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। এই ঘটনার পরই সন্ত্রাসীরা খুন করে সাহিনুদ্দিনকে।

উল্লেখ্য, সাবেক এমপি আউয়াল তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব।২০১৮ সালের নভেম্বরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরের বছর ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি নামে একটি দল গঠন করেন তিনি। বর্তমানে দলটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন আউয়াল।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে তরিকত ফেডারেশনের হয়ে সংসদ সদস্য হন এম. এ. আউয়াল। দলীয় গঠনতন্ত্রের ২৪ এর উপধারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

Loading


শিরোনাম বিএনএ