বিএনএ ক্রীড়া ডেস্ক: ইউরোপের ১২টি শীর্ষ ক্লাব নিয়ে চলতি বছরের আগস্টেই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ। ইতোমধ্যে এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে ইউরোপিয়ান শীর্ষ ক্লাবগুলো অফিসিয়ালি ।
রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিন্তিনো পেরেজকে চেয়ারম্যান করে ইউরোপিয়ান সুপার লিগের নতুন কমিটির ঘোষণা এসেছে । ইউরোপিয়ান সুপার লিগের নতুন গভার্নিং বডির তালিকায় রয়েছেন- ভাইস চেয়ারম্যান: স্ট্যান ক্রোয়েঙ্কে (আর্সেনাল), ভাইস চেয়ারম্যান: আন্দ্রেয়া অ্যাগ্নেলি (জুভেন্টাস) ও ভাইস চেয়ারম্যান: জোয়েল গ্লেজার (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)।
দর্শক-সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে একই মৌসুমে ইউরোপের বড় বড় দলকে অন্তত একবার মুখোমুখি করাতে ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’ নামে একটা টুর্নামেন্টের কথা নাকি ভাবা হচ্ছে।
এদিকে, নতুন এই সুপার লিগের আবির্ভাবের পরপরই বিবৃতি দিয়ে হুশিয়ার করেছে উয়েফা। এই ১২টি ক্লাবকে সতর্ক করে তারা জানিয়েছে যে, যদি কেউ এই বিদ্রোহী টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে তবে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বহিষ্কার হবে। এছাড়াও প্রত্যেকটি শীর্ষ ঘরোয়া লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেছে উয়েফা। পাশাপাশি ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার স্মরাণাপন্নও হয়েছে তারা।
ইউরোপিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই টুর্নামেন্টটি মূলত শীর্ষক্লাবগুলোকে কাড়িকাড়ি অর্থ এনে দেবে। ধারণা করা হচ্ছে এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করলেই ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো করে পাবে প্রত্যেকটি ক্লাব। তাই ফিফা ও উয়েফার হুমকি উপেক্ষা করে হলেও সুপার লিগে মাঠে নামতে পারে ক্লাবগুলো।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইএসএলের পক্ষ থেকে সুপার লিগের (ইএসএল) প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ১২টি ক্লাবের কথা জানানো হয়েছে । এর মধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে রয়েছে ছয়টি ক্লাব: লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহাম। স্পেন থেকে আছে: রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যালেটিকো মাদ্রিদ। ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ থেকে: জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান ও এসি মিলান। তবে ইংল্যান্ড, স্পেন আর ইতালি থেকে শীর্ষ ক্লাবগুলো নিজেদের সম্পৃক্ততা জানান দিলেও এখন পর্যন্ত জার্মানি ও ফ্রান্সের লিগ থেকে কোনো ক্লাব এই লিগে যোগ দেবে কিনা তা জানা যায়নি। তবে জার্মানি থেকে বায়ার্ন মিউনিখ ও লাইপজিগ যোগ দেবে বলে শোনা যাচ্ছে।
সুপার লিগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা নিজ নিজ ঘরোয়া লিগে খেলা’র পাশাপাশি ‘সপ্তাহের মাঝে নতুন এক প্রতিযোগিতা’ শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছে। ‘যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নযোগ্য’ পরিস্থিতি তৈরি হলেই সুপার লিগ মাঠে গড়াবে।
ইএসএল এক বিবৃতিতে জানায়, প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলোর তালিকায় আরও তিনটি ক্লাব রয়েছে । অর্থাৎ মোট ১৫টি ক্লাব। এই ১৫ দল সব সময় এই লিগে থাকবে। আরও পাঁচ দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে প্রতি মৌসুমে। অর্থাৎ মোট ২০ দল নিয়ে হবে সুপার লিগ।
এই ২০ দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে গ্রুপ পর্বে লড়বে। এখনকার মতোই ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ভিত্তিতে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ তিন দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে । বাকি দুটি স্থানের জন্য দুটি গ্রুপের চতুর্থ ও পঞ্চম দল দুই লেগের প্লে-অফ ম্যাচ খেলবে। এরপর বাকি পথটা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো।
দুই লেগের ভিত্তিতে ফাইনাল ছাড়া কোয়ার্টার ও সেমিফাইনাল হবে। আর্থিক বিষয় নিয়ে আয়োজকেরা জানিয়েছেন ‘বর্তমান ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার তুলনায় বেশি অর্থ আয় হবে।’ নতুন এই লিগে অংশ নেয়ার জন্য ‘প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলো ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরো করে পাবে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি