বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ধান ক্ষেত থেকে গলায় জুতার ফিতা পেঁচানো শামীম হক (১৬) নামে এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ জানুয়ারী) সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলায় বিরাশি গ্রামের একটি ধান ক্ষেত তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শামীম হক উপজেলার তারাটি চরপাড়া গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে। সে একই গ্রামের একটি দাখিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করত।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তারাটি চরপাড়া গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে শামীম হক। সে একই এলাকার শামছুল হুদা দাখিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করত। তার বাবা একজন দিনমজুর। সংসার চালাতে তার বাবার হিমশিম খেতে হত। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি শামীম হক চালাত ভাড়ায় অটোরিকশা। এই টাকা দিয়ে তার লেখাপড়ার খরচ ও বাবার সংসারে সহযোগিতা করত।
শুক্রবার মাদ্রাসা বন্ধের দিন, তাই সকাল সকাল অটোরিকশা নিয়ে বের হয় সে। বিকালে তার বাবাকে ফোনে জানায়, তার বোনের বাড়ি জেলার সদর উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামে যাবে সে। তবে রাতেই বাড়িতে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু রাতে বাড়িতে ফিরেনি। সকালের দিকে বিরাশি গ্রামের নিলার বাজার সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বাবা সিরাজ আলী বলেন, শামীমের অনেক স্বপ্ন ছিল, লেখাপড়া করে সংসারের হাল ধরার। লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে তার কষ্ট হত। এ কারনেই মাদ্রাসা বন্ধ হলে, সে ভাড়ায় অটোরিকশা চালাত। ওই টাকা দিয়ে সে এবার মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে। আর কিছু টাকা তাকে দিয়েছে সংসারের খরচ জোগাতো। কিন্তু ছিনতাইকারীরা তাকে বাঁচতে দিল না। ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ বলেন, গলায় জুতার ফিতা প্যাচানো অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলায় কালো দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে গলা টিপে হত্যা করেছে ছিনতাইকারীরা। বিষয়টি তদন্তে পুলিশ মাঠে রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিএনএ/ হামিমুর রহমান, ওজি/এইচমুন্নী