বিএনএ, ঢাকা: রাজধানী রামপুরা, পল্টন ও মুগদা এলাকা থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনজনই আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাদের স্বজনদের।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ঘটনাগুলো ঘটে। তাদের তিনজনকেই উদ্ধার করে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ।
নিহতরা হলেন- রামপুরার মোছা. রিনবি আক্তার (২৩) (আমেরিকার প্রবাসীর স্ত্রী), মুগদার বিদ্যুৎ (১৮) ও পল্টনের সাদিয়া আক্তার (১৬) ( গৃহকর্মী)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
বাচ্চু মিয়া বলেন, তিন জনই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁদের পরিবার দাবি করেছে। এর মধ্যে রিনভী আক্তার নামের এক নারীর মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ। বাকি দুজনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত রিনবি রাসেলের স্ত্রী। তিনি রামপুরার তালতলা এলাকায় ১৩৫৬/৩ ব্লক বি নিজ বাসায় থাকতেন।
নিহত রিনভির মামা শহিদুল ইসলাম জানান, রিনভির স্বামী রাসেল যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। মায়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় রিনভীর। এক পর্যায়ে অভিমান করে তিনি তার রুমে চলে যান। এরপর ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে রুমের ভেতরে গিয়ে দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন রিনভী। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত একটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাদিয়া ইসলাম (১৬) নামের এক গৃহকর্মী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার(১৮ ডিসেম্বর) রাত দশটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। সাদিয়া ফরিদপুরের বাসিন্দা সাইদুল ইসলামের মেয়ে। সে বেশ কয়েক মাস ধরে শান্তিনগরের একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত।
এ বিষয়ে পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বলেন, রোববার রাতে বাসায় একাই ছিল সাদিয়া। গৃহকর্তা পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা বাসায় ফিরে দেখেন যে, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোনো শব্দ না পেয়ে বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মিস্ত্রি এনে রুমের দরজা খোলা হয়। পরে রুমের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সাদিয়াকে দেখা যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্তের পর ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মুগদার উত্তর মান্ডা খালপাড় এলাকায় বাড়ির নিচতলায় দাদা-দাদির সঙ্গে থাকতেন বিদ্যুৎ। তিনি নবাবগঞ্জের মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। বিদ্যুৎ রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
তাঁর চাচা কালাম হোসেন জানান, আমার ভাতিজা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন মুগদার উত্তর মান্ডা খালপাড় এলাকায় ৩৫/১ পাঁচ তলা ভবনের ছাদে পাইপের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় পেচিয়ে ফাঁস দেয়। পরে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান কি কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়েছে এ বিষয় নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।
বিএনএ/এমএফ