28 C
আবহাওয়া
১২:৪৬ অপরাহ্ণ - জুন ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ভারতকে কাঁদিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হেক্সা শিরোপা

ভারতকে কাঁদিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হেক্সা শিরোপা


বিএনএ, স্পোর্টস ডেস্ক: চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতে উড়ছিল ভারত। এতে ঘরের মাঠে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল রোহিত শর্মার দল। বিশ্ব শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতবে রোহিত-কোহলিরা এমন প্রত্যাশা থেকেই আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্রায় লাখখানেক দর্শক উপস্থিত হয়েছিল। পুরো স্টেডিয়ামে যেন রূপ নিয়েছিল ‘নীল সাগরে’। সেই ‘নীল সাগরেই’ স্বাগতিকদের ডুবিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে অস্ট্রেলিয়া।

রোববার (১৯ নভেম্বর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারতকে ছয় উইকেটে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলল অস্ট্রেলিয়া। এ যেন ২০০৩ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি। সেবার রিকি পন্টিংয়ের বীরত্বে ১২৫ রানে ভারতকে হারায় অজিরা।

আহমেদাবাদ শহর লোকে লোকারণ্য! আয়োজক ভারত ফাইনালে ওঠায় এমনটা হবারই ছিল। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম যে জন সমুদ্রে রূপ নেবে এটা অনুমেয়ই ছিল। সকাল থেকে আসা ভারতীয় দর্শকে পুরো গ্যালারিতে ছিল নীলের সমুদ্র। সেখানে হলুদ জার্সি খুঁজে পাওয়াটা একটু দুষ্করই বটে। তবুও কয়েকজন যে ছিল না তা বলার সুযোগ নেই। গ্যালারি এমন একপাক্ষিক হবে সেটা আগে থেকেই জানতেন প্যাট কামিন্স। ম্যাচের আগের দিন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক বলেছিলেন, এমন ভরা গ্যালারিকে চুপ করিয়ে দেয়ার চেয়ে তৃপ্তির কিছু নেই। বিশ্বকাপ জুড়ে দাপটের সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচ জয়ে অপ্রতিরোধ্য ভারত ফাইনালে পেয়েছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে। টানা দশ জয়ে ফাইনালে আসা দলটি ঘরের মাঠে আহমেদাবাদে ১ লক্ষ ৩২ হাজার সমর্থকদের সামনে বিশ্বকাপ জয়ের হুংকার দিয়েছিল। তবে ক্রিকেট বিশ্বের সকল বিশ্লেষক থেকে ধরে ভক্তদের শিরোপা জয়ের ‘ফেবারিট’ তকমা পাওয়া ভারতকে নিজেদের জাত চিনিয়ে ৭ উইকেটের জয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের দেওয়া ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে হোঁচট খেলেও ট্রাভিস হেডের বিধ্বংসী শতকে ৪২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো অজিরা।

শুরুটা হয়েছিল শুভমন গিলকে দিয়ে। স্টার্ককে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে আসেন মিড অনে দাঁড়ানো এডাম জাম্পার হাতে। ক্ষুব্ধ চোখজুড়া নিয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরতে হয় ৭ বলে ৪ রান করে। যেটি হতে পারতো আরও আগেই। কোনো রান করার আগেই স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি, স্রেফ বলটা ক্যারি করেনি বলে বেঁচে যান তখন।

গিলকে হারানোর ক্ষত পরে আরও বাড়ে রোহিত শর্মাও পাওয়ার প্লের ভেতরই ফিরে যাওয়ার পর। ম্যাক্সওয়েলকে তুলে মারতে গিয়ে বল তুলে দেন অনেকটুকু উপরে, কাভার থেকে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন ট্রাভিস হেড। ব্যাট হাতে পরে আর এর আগে এই ক্যাচ নিয়ে ম্যাচের ভাগ্যও সম্ভবত বদলে দেন তিনি। তখনও অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার রানটা ঠিকঠাকই ছিল, ১০ ওভারে তারা করেছিল ৮০ রান।

শ্রেয়াস আয়ার আউট হওয়ার পর ভারতের ডাগ-আউটে বসে থাকা রাহুল দ্রাবিড়ের স্মৃতিতে সম্ভবত বারবার ২০০৩ নাড়া দিয়ে গেছে। সেবার তিনি ছিলেন ক্রিকেটার, বিশ্বকাপ ফাইনাল হেরেছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে। এবার তিনি কোচ, এখনও কি তেমন হবে? ৮১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ওই দুশ্চিন্তা মাথায় ভর করা খুব অস্বাভাবিকও নয়।

কিন্তু এরপরই তাকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। এ দুজনের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটির ফাঁকে বিরাট কোহলি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। পুরো বিশ্বকাপজুড়ে দুর্দান্ত খেলা এই ব্যাটারের রান প্রায় ছিল আটশ হওয়ার পথে, বাকি আর কারো নেই ছয়শও।

তবে কোহলিকে থামতে হয় অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে। প্যাট কামিন্স আগের দিন নিজের চাওয়া জানিয়েছিলেন, ‘চুপ’ করিয়ে দিতে চান এক লাখ ত্রিশ হাজার মানুষকে। কোহলিকে আউট করার পর বাস্তব অনুভূতিটাও পেয়ে যান তিনি। ৬৩ বলে ৫৪ রান করে আউট হয়ে যান কোহলি, রাহুলের সঙ্গে তার ৬৭ রানের জুটি ভাঙে।

কোহলি আউট হওয়ার পর দায়িত্বটা পড়ে লোকেশ রাহুলের ওপর। সেটি তিনি পালনও করছিলেন ঠিকঠাক। মাঝে তার সঙ্গী হয়ে ফিরে যান রবীন্দ্র জাদেজা। এরপরও রাহুলও এমন এক বলে ফেরেন, যেখানে তার আদতে করার ছিল না কিছুই।

স্টার্কের ওই বলে উইকেটরক্ষক ইংলিশের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১০৭ বল খেলে স্রেফ একটি বাউন্ডারি হাঁকানো রাহুল করেন ৬৬ রান। তার বিদায়ের পর সব আশাই ছিল সূর্যকুমার যাদবকে ঘিরে। কিন্তু তাকে স্লো বল করে বিপাকে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। আলো না ছড়িয়েই সাজঘরে ফেরত যান সূর্য। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি।

শেষ ওভারে এসে একটি চার হাঁকান মোহাম্মদ সিরাজ। তাতে দলের রানও যায় ২৪০-এর ঘরে। স্টার্ক ১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন, দুই উইকেট করে পান হ্যাজলউড আর কামিন্সও।

ভারতের একাদশ :

রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।

অস্ট্রেলিয়ার একাদশ :

প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মারনাস লাবুশেন, জশ ইংলিস (উইকেটকিপার), অ্যাডাম জ্যাম্পা, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ