32 C
আবহাওয়া
৬:২৫ অপরাহ্ণ - অক্টোবর ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৪ (কক্সবাজার-১)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৪ (কক্সবাজার-১)


বিএনএ ডেস্ক : বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর। আজ থাকছে কক্সবাজার-১ আসনের হালচাল।

YouTube player

কক্সবাজার-১ সংসদীয় আসনটি চকোরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯৪ তম আসন। ১৯৯১ সালের ২৭ই ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১১ হাজার ১ শত ৪০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮ হাজার ৩ শত ৬৮ জন। নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামের এনামুল হক মন্জু বিজয়ী হন। দাঁড়ি পাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৩৭ হাজার ৮ শত ৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জহিরুল ইসলাম। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩২ হাজার ৮ শত ৪৯ ভোট ।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

১৯৯৬ সালের ১২ই জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১১ হাজার ৫ শত ৩৮ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ২৬ জন। নির্বাচনে বিএনপির সালাহ উদ্দীন আহমেদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭২ হাজার ৫ শত ৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দীন আহমেদ সিআইপি। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫০ হাজার ৮ শত ২৯ ভোট।

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৪ শত ২৫ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ১২ হাজার ৪ শত ৩৮ জন। নির্বাচনে বিএনপির সালাহ উদ্দীন আহমেদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬ শত ২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দীন আহমেদ সি আই পি । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭৪ হাজার ২ শত ৯৭ ভোট।

২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ১১ হাজার ৮ শত ৭৯ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪ জন। নির্বাচনে বিএনপির হাসিনা আহমেদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫ শত ১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দীন আহমেদ সি আই পি । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২১ হাজার ১ শত ১১ ভোট।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জাতিয় পার্টির মোঃ ইলিয়াছ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮ শত ২৯ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩ শত ৪১ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৮ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের জাফর আলম, ধানের শীষ প্রতীকে হাসিনা আহমেদ, লাঙ্গল প্রতীকে মোঃ ইলিয়াছ, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আলী আছগর, হারিকেন প্রতীকে মুসলিম লীগ এর মুহাম্মদ ফয়সাল, সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউল আলম, মটর গাড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তানিয়া আফরিন , হাতুড়ি প্রতীকে ওয়ার্কাস পার্টির আবু মোঃ বশিরুল আলম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জাফর আলম বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮ শত ৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির হাসিনা আহমেদ। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৫৬ হাজার ৬ শত ১ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়,পঞ্চম সংসদে জামায়াত ইসলামী, ষষ্ঠ,সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদে বিএনপি, দশম সংসদে জাতীয় পার্টি ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কক্সবাজার-১ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজার-১ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫১.৩৩% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩০.৩১%, বিএনপি ১৪.৯৮%, জামায়াত ইসলামী ৩৪.৯৭% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১৯.৭৪% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৪.২৩% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩২.৩৭%, বিএনপি ৪৬.২৩%, জাতীয় পার্টি ০.৬৯%, জামায়াত ইসলামী ১৭.২৩% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩.৪৮% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৪.৬৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৪.৯৭%, ৪ দলীয় জোট ৬৩.৩৬%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৬৭% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৯.৪৬% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৪৩.৪১%, ৪ দলীয় জোট ৫৬.১০%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.৪৯% ভোট পায়।

কক্সবাজার-১ (চকোরিয়া-পেকুয়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের জাফর আলম । দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। জাফর আলম ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি, সাবেক জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি রেজাউল করিম, চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, সাবেক জেলা জজ আমিনুল হক।

বিএনপি নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। এই অবস্থায় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। যদি নির্বাচনে যায়, তাহলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দীন আহমেদের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। তবে তিনি বর্তমানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অবস্থান করছেন। মামলার সাজা জটিলতায় তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হলে সেক্ষেত্রে তার সহধর্মিণী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ মনোনয়ন চাইতে পারেন।

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে কক্সবাজার জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মৌলভী ইলিয়াস মনোনয়ন চাইবেন।

জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন নেই। তাদের নিবন্ধন মামলা এখন উচ্চ আদালতে। এখনও পর্যন্ত দলটি নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহার বা স্বাগত কোনটাই ঘোষণা করেনি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে স্বতন্ত্র বা জোটের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন কক্সবাজার জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও কক্সবাজার শহর জামায়াতের সভাপতি আবদুল্লাহ আল ফারুক।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, কক্সবাজার-১ (চকোরিয়া-পেকুয়া) সংসদীয় আসনটি বিএনপির ঘাটি হিসাবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালের পর প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামশুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মাহমুদুল করিম চৌধুরী, ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পাটির এ.এইচ সালাউদ্দিন মাহমুদ, এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর এনামুল হক মঞ্জু, ১৯৯৬ সালের ষষ্ট ও সপ্তম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সালাউদ্দিন আহমেদ প্রকাশ এপিএস সালাউদ্দিন নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মৌলবী মোহাম্মদ ইলিয়াস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সংসদ সদস্য হন। এই আসনে নৌকার পতাকা উড়তে সময় লাগে ৪৫ বছর। ২০১৮ সালের নির্বাচনে পেকুয়ার জামাই ও চকরিয়ার বাসিন্দা বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের জাফর আলম নির্বাচিত হন ।

আওয়ামী লীগ উন্নয়নের দিক থেকে অতীতের সব রের্কড ভেঙ্গেছে। পেকুয়ায় তৈরি হয়েছে দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি। গড়ে উঠেছে নৌবাহিনীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, রাস্তাসহ নানা অবকাঠামো। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে পেকুয়ার চেয়ে ভোটার দ্বিগুণ বলে আসনটির জয় পরাজয় মূলত নির্ধারণ হয় চকোরিয়ার ভোটে। উন্নয়নেও পেকুয়ার চেয়ে এগিয়ে চকরিয়া। এই আসনে জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক তৎপরতা দৃশ্যমান না হলেও তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা বলয়ের বহিরে থাকায় বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। তবে তৃণমুল পর্যায়ে প্রচুর নিরব ভোট রয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে এবং বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলে জাতীয় সংসদের ২৯৪তম সংসদীয় আসন (কক্সবাজার-১) আসনটিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি হাড্ডাহাডি লড়াই হবে। যদি বিএনপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা না করে সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগই বিজয়ী হবেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ/ শাহীন, শাম্মী, রেহানা, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ