বিএনএ ডেস্ক: পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে আজও রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এরমধ্যে গত বুধবার (১২ জুলাই) নয়াপল্টনের সমাবেশ থেকে এক দফার ঘোষণায় পদযাত্রার কথা জানায় বিএনপি। একই দিন শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা আসে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দুই দলের প্রথম দিনের কর্মসূচি। আজ দ্বিতীয় দিনে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশের রাজনীতিতে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ।
এদিন সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফার দাবি আদায়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করে বিএনপি। সমাবেশ থেকে ঘোষণা আসে গতকাল ১৮ ও ১৯ জুলাইয়ের পদযাত্রা কর্মসূচির। এরমধ্যে প্রথম দিনে গাবতলী থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা করে দলটির নেতাকর্মীরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ বুধবার (১৯ জুলাই) আব্দুল্লাহপুর থেকে পুরান ঢাকা পর্যন্ত পদযাত্রা করবে দলটি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিএনপির পদযাত্রার বিপরীতে একই সময়ে সারাদেশে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার কর্মসূচির ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যদিও আগে থেকে আন্দোলনরত বিএনপি ও তার মিত্রদের কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশ ও সতর্ক অবস্থানের কর্মসূচি পালন করে আসছিল সরকার দলীয়রা। তবে এখন থেকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা হিসেবে পালিত হবে বলে ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীনরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আওতাধীন সব জেলা ও মহানগরে শান্তি ও উন্নয়ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিকেল ৩টায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। শোভাযাত্রার আগে সাতরাস্তায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর ছাড়াও রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের আওতাধীন সব জেলা ও মহানগরে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ। এদিন ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে থেকে ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। সমাবেশের পর শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড ও সিটি কলেজের সড়ক হয়ে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। পদযাত্রাটি টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ গোলচত্বর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা (আগারগাঁও), বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, এফডিসি, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল (শাপলা চত্বর), ইত্তেফাক মোড় এবং দয়াগঞ্জ রায়সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে বিকেল ৪টায় ১৩ কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষ হয়। এদিন বিএনপি ছাড়াও যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া দলগুলোও পালন করে এই কর্মসূচি। এর মধ্যে ছিল, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শুধু ঢাকা মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে তারা। এদিন আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পদযাত্রা শুরু হবে। পরে বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, আবুল হোটেল, খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদাপাড়া, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীতে (চৌরাস্তা) বিকেল ৪টায় ২৪ কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষ হবে। রামপুরা ব্রিজে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রায় যুক্ত হবে। পদযাত্রায় প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার নেতাকর্মীকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সফল করতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ