22 C
আবহাওয়া
১:২৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঈদুল আজহা(আযহা) ২০২৩ কত তারিখে? বাংলাদেশে

ঈদুল আজহা(আযহা) ২০২৩ কত তারিখে? বাংলাদেশে

ঈদুল আজহা(আযহা) ২০২৩ কত তারিখে

জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উদয়ের ওপর নির্ভর করে ইংরেজি মাসের কত তারিখে ঈদুল আজহা(আযহা) বা কোরবানির ঈদ  ২০২৩ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে ।

প্রায়শ: আমরা দেখতে পাই প্রথমে মধ্যেপশ্চিমের(মিডলওয়েস্ট)দেশগুলোতে আমাদের একদিন আগে চাঁদ দেখা যায়। ঈদুল আজহা(আযহা) বা কোরবানির ঈদ চাঁদের মাস জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে হয়ে থাকে। সৌদিআরবে সে মাসের ৯ তারিখ পবিত্র হজ্ব পালিত হয় এবং পরদিন দেশটির মুসলমানরা ও দেশি বিদেশি সমবেত হাজীরা মহার আল্লাহর নামে পশু কোরবানী দেন।

এই দিনে মুসলমানরা ইব্রাহিম (আ.)-এর কুরবানীকে সম্মান জানাতে গৃহ পালিত পশু (যেমন :গরু, ভেড়া, ছাগল বা  উট )জবাই করে।

 

ঈদুল আজহা(আযহা)২০২৩ কত তারিখে?

Qurbani Eid koto tarik

স্বাভাবিকভাবে সৌদিআরবসহ আরব বিশ্ব,কানাডা আমেরিকা, জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের(বাংলাদেশের) একদিন আগে ঈদ পালিত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ঈদুল আজহা(আযহা)২০২৩ সালের জুন মাসের ২৮,২৯ ও ৩০ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে।তবে এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। Qurbani Eid koto tarik

বাংলাদেশের ভেতরেও বিভিন্ন দরবারের অনুসারী অনেকে সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে ঈদ পালন ও রোজা রাখেন। অবশ্য এ সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।

 

2023 ঈদুল আজহা

ঈদুল আজহা 2023 হল মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব।এই উৎসবে মুসলমানরা তিনদিন ধরে পশু কোরবানি করতে পারেন।

পশু কোরবানী দিয়ে  গরীব মিসকিন, আত্মীয় স্বজনকে না দিয়ে সমস্ত মাংস ফ্রিজে রেখে সারা বছর ধরে খাওযার জন্য কোরবানী করলে তা জায়েজ হবে না। প্রাপ্ত মাংস তিনভাগ করে একভাগ গরীব মিসকিন, আরেকভাগ নিকট আত্মীয় স্বজনকে দিতে হবে।এটাই ইসলামের শিক্ষা।

ঈদুল আজহা(আযহা)২০২৩

 

এটি একটি উৎসব যা হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর প্রতি তার দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছিলেন তার স্মরণে।

 

ঈদ শব্দের অর্থ আনন্দ, উৎসব বা বারবার ফিরে আসা। আর আজহা শব্দটির অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ বা কোরবানির পশু জবাহ করা ইত্যাদি। আর কোরবান অর্থ নৈকট্য, সান্নিধ্য, উৎসর্গ। উল্লেখিত শব্দ এবং অর্থগুলো থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, ত্যাগ বা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের যে চেষ্টা করা হয় তাকেই ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ বলে।

পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা (২০২৩)
পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা (২০২৩) ইমেজ

প্রচলিত অর্থে কোরবানি হলো- পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে মহান রাববুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকে পশু জবাই করা।

মহান আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘আমি প্রত্যেক স¤প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি।›

সুরা কাউছারে বলেছেন, ‘সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো।› (সূরা কাওসার, আয়াত-২)

 

ঈদুল আজহা(আযহা)২০২৩ মাসে তথা জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ ফজর হতে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে নিম্মের তাকবীরটি উচ্চস্বরে পড়া ওয়াজিব।না পড়লে গুনাহ্গার হবেন। যদি ভুলে কোন ওয়াক্তে না পড়েন, যখনই মনে হবে তখনই পড়ে নেবেন।

তাকবীরে তাশরীক

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আক্ বার  আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2023

 

২০২৩ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে

বাংলাদেশে ঈদুল আজহা (আযহা) ২০২৩ সালের জুন মাসের ২৮,২৯ ও ৩০ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে।তবে এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল।সরকারি ক্যালেন্ডারে এই পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদের ছুটি রাখা হয়েছে। কোন কারণে জুনের ২৭ বা ২৯ তারিখ ঈদ হলে ছুটি বাড়বে বা কমবে। জুন মাসের ২৮,২৯ ও ৩০ হল যথাক্রমে বুধ,বৃহস্পতি ও শুক্রবার।শনিবার স্বাভাবিক সরকারি ছুটি।

ঈদুল আযহা নিয়ে কিছু কথা

হযরত ইব্রাহীম (আ:) স্বপ্নযোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি দেয়ার জন্য আদিষ্ট হন। এরপর তিনি ১০টি উট কোরবানি করেন। আবারো একই স্বপ্ন দেখেন নবী ইব্রাহীম (আ.)। এবার তিনি ১০০টি উট কোরবানি করলেন। তৃতীয়বার যখন একই স্বপ্ন দেখলেন তখন তিনি বুঝতে পারলেন, আমার কাছে প্রিয় বস্তু একমাত্র কলিজার টুকরা সন্তান ইসমাঈল আ: ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত তিনি যে মানের তাঁর ত্যাগও হবে সেই মানের। আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাও তাই ছিলো।

ইব্রাহীম (আঃ) এ বিষয়টি প্রাণপ্রিয় সন্তান অবুঝ শিশু ইসমাঈল (আঃ) এর সাথে মতামত চাইলেন, কোরআনের ভাষায়- ইয়া বুনাইয়া ‘ইন্নি আরা ফিল মানাম আন্নি আযবাহুকা’ হে বৎস! নিশ্চয়ই আমি স্বপ্ন দেখেছি তোমাকে জবাহ করছি। সন্তানের পক্ষ থেকে উপযুক্ত জবাব ‘ইয়া আবাতিফড়াল মাযা তু›মার ছাতাযেদুনি ইনশাল্লাহ’ ‘আববাজান! আপনি যে বিষয়ে আল্লাহর তরফ থেকে আদিষ্ট হয়েছেন, তা পূর্ণ করুন। ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ (সূরা সাফফাত, আয়াত ১০২)

আত্মত্যাগের বিস্ময়কর ইতিহাস

আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে হযরত ইব্রাহীম (আ:) ও মা হাজেরা কোরবানির জন্য কলিজার টুকরা পুত্রকে সাজিয়ে নিলেন। আমাদের কোরবানি কি এমন আত্মত্যাগের নমুনা হয়? আমরা কি স্মরণ করি আল্লাহর পরীক্ষা চলছে আমাদের আর্থিক কোরবানির মধ্য দিয়ে? বালক ইসমাঈল (আ:)কে মা-বাবা এমন শিক্ষা দিয়েছেন যে সেও নিজের জানকে আল্লাহর রাহে বিলিয়ে দিয়ে আত্মত্যাগের বিস্ময়কর ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। আল্লাহর প্রেমিক হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর ধারালো ছুরি হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর ঈমানী শক্তির কারণে একটি পশমও কাটতে পারেনি। তার পরিবর্তে আল্লাহর হুকুমে জিব্রাইল (আ:) বেহেশত থেকে জান্নাতি দুম্বা এনে ইসমাঈল (আ:)-এর স্থলে রাখলে তা কোরবানি হয়ে যায়।

যার ওপর যাকাত ফরজ তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব

ঈমানের সর্বোচ্চ নমুনা হলো আল্লাহর এই বাণী আল্লাহতায়ালা বলেন- ‘বলো, আমার সালাত, আমার হজ ও কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ সবই বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর উদ্দেশ্যে।› (সূরা আনআম, আয়াত-১৬২) যিনি এমন মানসিকতা রাখবেন আল্লাহ তার উপরই সন্তুষ্ট থাকবেন।

যার ওপর যাকাত ফরজ তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। (অর্থাৎ ১০ জিলহজের ফজর হতে ১২ জিলহজের সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পারিবারিক প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী বাদ দিয়ে কোনো ব্যক্তি যদি ‘নেসাব’ পরিমাণ মালের মালিক হয়, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। শরীয়তের ভাষায় নেসাব পরিমাণ মাল বলা হয়, সাড়ে ৫২ তোলা রূপা অথবা সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ কিংবা তৎসম মূল্যের সম্পত্তির বাংলাদেশি টাকা।) এখানেও একটি হেকমত দেখেছেন? সোনা রূপা যাই হোক না কেন, এর অর্থ হলো যে দেশে যেটার মূল্য প্রাধান্য পায় সে জন্য দুটি মূল্যবান সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন।

 কোরবানির ইতিহাস

 

ইব্রাহিম (আঃ) তার পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু আল্লাহ তার পুত্রকে একটি দুম্বা  দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছিলেন।

আল্লাহ ইব্রাহিম (আঃ)-এর আত্মসমর্পণে আল্লাহ তাআলা  এতটাই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে, তিনি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর  এই প্রদর্শনকে একজন মুসলমানের জীবনের একটি স্থায়ী অংশ বানিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে – সূরা আস-সাফফাত (37:102)।

 

কুরবানির ঈদ ‘ঈদুল কবির’ নামেও পরিচিত ইয়েমেন, সিরিয়া ও উত্তর আফ্রিকার মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও মিসরের মতো দেশে। ঈদুল কবির মানে ‘বড়’ ঈদ। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত এ ঈদ মিসর, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে ‘ঈদুল বাকারাহ’ নামেও পরিচিত। পাকিস্তান, ভারত আর বাংলাদেশের কিছু জায়গাতেও এটি ‘বকরি ঈদ’ বলে পরিচিত।

 

লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে বড় বড় গরু ক্রয় করে প্রদর্শন করা, বাহাদুরী জাহির করা অথবা গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি হবে না, বরং হালাল উপার্জন, ইখলাছ ও একনিষ্ঠতাই হলো কোরবানি কবুল হওয়ার আবশ্যকীয় শর্ত, কে কত টাকা দিয়ে পশু ক্রয় করলো, কার পশুটি কত মোটাতাজা বা সুন্দর, আল্লাহ তা দেখেন না। তিনি দেখেন সহীহ নিয়ত ও তাকওয়া। হাদীসের ভাষায়-ইন্নাল্লাহা লা ইয়ানযুরু ইলা ছুরাতেকুম অলাকিন ইয়ানযুরু ইলাকুলুবেকুম ও আ›মালেকুম। আল্লাহ কারো চেহারার দিকে তাকাবেন না বরং তিনি তাকাবেন তোমাদের অন্তর এবং আমলের দিকে। আল্লাহ আমাদের সকলের কোরবানি কবুল করে নিন আমীন।

 

মানুষকে আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য ।আল্লাহর হুকুম মেনে চলার মধ্যে মানব পরিচয়ের সার্থকতা। কিন্ত মানুষের পক্ষে প্রায়শই সেটা সম্ভব হয় না। কারণ এ ক্ষেত্রে তিনটি শক্ত প্রতিপক্ষ তাকে সর্বদা বাধা প্রদান করে। সেগুলো হল: ১) তার নিজের প্রবৃত্তি ২) পার্থিব মোহ ৩) শয়তানের প্রতারণা।

এ তিনটি শক্ত প্রতিকূলতার বিপক্ষে দাড়িয়ে আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্বসমূহ সঠিকভাবে পালন করতে মানুষের প্রয়োজন ইস্পাতকঠিন মানসিক শক্তি।

কারণ শয়তান সর্বদা মানুষকে আল্লাহর আদেশের বিরুদ্ধে চলতে প্ররোচিত করে।

মানুষের নিজের প্রবৃত্তি সব সময় আকর্ষনীয় বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়।হালাল-হারাম বাছবিচার সে করে না।

পৃথিবীর যাবতীয় চিত্তাকর্ষক বিষয় মানুষকে আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচারণে উদ্ধুদ্ধ করে।চলমান জীবনের বাস্তবতায় বজ্রকঠিন মানসিক শক্তি ছাড়া কোনো মানুষের পক্সে আল্লাহর বিধানের ওপর টিকে থাকা সম্ভব নয়। মানুসকে সেই মানসিক শক্তি যোগায় তাক্বওয়া নামক তার আত্মার এক সুকোমল বৃত্তি।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন,

‘আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সামনে (হাশরের ময়দানে) দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করবে আর প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে, জান্নাত হবে তার ঠিকানা’।

জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহা(আযহা) বা কোরবানির ঈদ ।  চাঁদ উদয়ের ওপর নির্ভর করে ইংরেজি মাসের কত তারিখে ঈদুল আজহা(আযহা) বা কোরবানির ঈদ  ২০২৩ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে ।

বিএনএনিউজ২৪,জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ