আব্দুল্লাহ আল মাহবুব শাফি
বিএনএ, নোবিপ্রবি: প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তারা এখন আনন্দের দিন কাটাচ্ছেন, হাসছেন প্রাণ খুলে, গাইছেন আনন্দের গান। অন্তত তাদের অনুভূতি গুলো তাই বলে। জীবন বিনির্মাণের এক স্থায়ী সূতিকাগার বলা যায় বিশ্ববিদ্যালয়কে। স্বভাবতই নবীন শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ক্যাম্পাস একটু উচ্ছ্বাসের, রোমাঞ্চের। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) নবীন শিক্ষার্থীদের স্বপ্নময় ভাবনা-অনুভূতি গুলো শুনবো আমরা, জানবো কেমন যাচ্ছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।
‘স্বপ্নকে ছুঁতে চাই আরো কাছ থেকে’
তামজিদা দেওয়ান মৃত্তিকা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় আমার জীবনের সেই অধ্যায় যেখান থেকে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে চেনা শুরু করেছি। বাড়ি থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে এক অচেনা রাজ্যে নিজেকে গোছানোর চেষ্টা করছি হাজারো স্বপ্নের সাথে। এখানে এসে নিজস্বতার, একাডেমিক পড়াশুনোর বাইরেও এক আলাদা জগৎ সৃষ্টি হয়েছে, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার চেয়ে বেশি ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি। নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস এখন আমার দ্বিতীয় ঠিকানা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন যে স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেছিলাম তা পূর্ণতা পাক, এটাই প্রত্যাশা করি। স্বপ্নবিলাসী এই আমি নিজ আবেগের স্থানে পড়ার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করি।”
‘হেরে যাওয়ার গল্প ভুলে নতুন করে পথ চলতে শেখায় এ ক্যাম্পাস’
আরিজ রেজা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিজ। তিনি বলেন, সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা। নিজের মধ্যে জীবনের এই অনুচ্ছেদ নিয়ে নানান অলীক-কল্পনা রচনা করেছিলাম। অবশেষে নোবিপ্রবির মাধ্যমেই সে স্বপ্নের পথযাত্রা। চিরপরিচিত কক্সবাজার শহর, প্রিয়মুখগুলো পেছনে ফেলে তাদের সাথে জড়িত স্মৃতিগুলোকে সাথে নিয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনার অনুভূতিটা ছিল খানিকটা অন্যরকম। কিন্তু সময়ের সাথে নোবিপ্রবির আন্তরিকতায় কিছুটা গুছিয়ে নিয়েছি নিজেকে। এখানে স্বপ্ন বোনা চলে অবিরত। হেরে যাওয়ার গল্প ভুলে নতুন করে পথ চলতে শেখায় এ ক্যাম্পাস। মনের ক্যানভাসে ধীরে ধীরে যুক্ত হচ্ছে শান্তি নিকেতন, নীল দিঘি ও পকেট গেটের টঙের দোকানগুলোতে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্ত। এ যেন এক স্বপ্নময় স্থান, যার প্রতিটি দেয়ালে জ্বলজ্বল করছে হাজারো সফলতার গল্প। এই স্বপ্নভূমি যেন এক লক্ষ্য পূরণের মঞ্চ। আমিও এই সোনালি প্রাঙ্গণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে নোবিপ্রবির দেয়ালে এক টুকরো তারার ন্যায় আলো ছড়াতে চাই। আবেগ, ভালোবাসা এবং গর্বের সহিত বলতে চাই আমি একজন নোবিপ্রবিয়ান।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে রঙিন, আমার প্রতিদিন’
স্বপন পাল
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপন। তিনি বলেন, “একজন শিক্ষার্থীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগের জায়গা, স্বপ্ন বিনির্মাণের আতুরঘর। ভোরের শুকতারায় যেমন প্রতিটি দিন, প্রতিটি ফুল নব রঙে নিজেকে পরিস্ফুটিত করে তুলে ঠিক তেমনিই কলেজ জীবনে মনিকোঠায় অঙ্কিত সুপ্ত নিত্য ভাসমান এক স্বপ্ন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া। দীর্ঘদিনের হাড়ভাঙা, রাত্রি যাপনের কতশত কষ্টের পথ পেরিয়ে যখন কাঙ্খিত স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুঠোফোনে বার্তা আসে- অভিনন্দন তুমি এখানে ভর্তির সুযোগ লাভ করেছো তখন হৃদয়ের প্রতিটি অংশের সুখকর অনূভুতির প্রকাশ করার শব্দ, ভাষা কিছুরই যেন সঠিক সম্মিলন ঘটানো যায় না। মনে হয় আরো নতুন কিছু শব্দ দরকার, অক্ষর দরকার। নোবিপ্রবি’র সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় তিন মাসের। ব্যাগভর্তি বইয়ের সাথে কতশত ধূসর স্বপ্নকে রঙিন করার প্রত্যয়ে নিত্য ছুটছি ১০১ একরে। স্বপ্ন একজন শিক্ষক হবো। একদম গ্রামের শিক্ষক। আর গ্রামের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি দীর্ঘ এই পথচলায় আমার স্বপ্নভূমি, আমার নোবিপ্রবির উপাখ্যান সবার সামনে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের কল্যাণে নিজেকে পরিস্ফুটিত করবো।”
বিএনএ/এমএফ