17 C
আবহাওয়া
১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রী ‘কন্টাক্ট: মামুনুল

দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রী ‘কন্টাক্ট: মামুনুল

হেফাজত নেতা মামুনুল হক

বিএনএ ডেস্ক: চলতি মাসের ৩ তারিখ গত নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে নারীসহ হেফাজত নেতা  মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয়রা।পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেইসঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল।পরে সেখানে হেফাজতকর্মীরা জড়ো হয়ে মামুলকে ‍পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।এরপর  রাতেই ঢাকায় চলে আসেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক।ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসায় না গিয়ে পাশেই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় যান তিনি।সোনারগাঁয়ের রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকেই মোহাম্মদপুরের এ মাদ্রাসায় ছিলেন মামুনুল।

রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা ভাংচুরের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এই মামলায় সোমবার মামুনুলের সাত দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৭টি এবং নারায়ণগঞ্জে একটি মামলা রয়েছে।

এছাড়া, সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে আন্দোলনের সময় হেফাজতের তাণ্ডব ও সহিংসতায় করা ৯০ মামলার মধ্যে অনেকগুলোর আসামি তিনি।এছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় করা একাধিক মামলার আসামি মামুনুল।

রোববার গ্রেফতারের পর মামুনুলকে প্রথমে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয় এবং পরে তেজগাঁও থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে তাকে হস্তান্তর করা হয় গোয়েন্দা পুলিশের কাছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনটি বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন মামুনুল হক।তবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছেন, প্রথম স্ত্রী বাদে বাকি দুই স্ত্রীকে তিনি ‘কন্টাক্ট ম্যারেজ’ করেছিলেন। স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার দিতে পারবেন না মৌখিক এই শর্তেই তাদের বিয়ে করেছেন। তার দেয়া শর্ত মেনেই দুই নারী তার সঙ্গে শরীয়তের বিধান মতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বলে জানান এই হেফাজত নেতা।

মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ বিষয়ে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, তাকে মামলা, জিডিসহ সহিংসতার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে  তিনটি বিয়ে করা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিয়ে দাবি করলেও প্রথমটি বাদে বাকি দুই বিয়ের প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি মামুনুল।

এদিকে, রাতে মামুনুল হককে থানা পুলিশের কাছ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে আরেক দফা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সে সময়ও তাকে সহিংসতার পাশাপাশি তিন বিয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথম স্ত্রীকে তিনি শরীয়ত সম্মত ও প্রচলিত আইন মেনে বিয়ে করেছেন। কিন্তু বাকি দুই নারীকে বিয়ের দাবি করলেও কাবিননামা নেই বলে জানান মামুনুল। এই দুই নারীকে ‘কন্টাক্ট ম্যারেজ’ করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।

জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হকের দাবি, জান্নাত আরা ঝর্ণার বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি তার অভিভাবকত্ব নেন।জান্নাতকে পূর্ণ স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবেন না এমন মৌখিক শর্তে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন এই হেফাজত নেতা। তার শর্ত জান্নাত আরা মেনে নিয়েছিল। দুই বছর ধরে তিনি জান্নাত আরার ভরন-পোষণ ছাড়াও ব্যবসা করার জন্য মূলধন দিয়েছেন এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।

একই শর্তে তৃতীয় স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লিপিকেও বিয়ে করেন দাবি করে মামুনুল জানান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে একসঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স করার সময় তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর জান্নাতুলের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাকেও স্ত্রীর অধিকার না দেয়ার মৌখিক শর্তে তাকে বিয়ে করেন তিনি।

তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তার প্রথম স্ত্রী কিছুই জানতেন না বলে মন্তব্য করেন মামুনুল।

স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে কেন বিয়ে করেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, স্ত্রীর মর্যাদা না দেয়ার শর্ত দিয়েই তিনি বিয়ে করেছিলেন। ইসলামে এটা জায়েজ রয়েছে বলেও দাবি করেন মামুনুল।

প্রথম স্ত্রীর কাছে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ‘শহীদুল ভাইয়ের ওয়াইফ’ বলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামুনুল  বলেন, বিষয়টি জানার পর তার প্রথম স্ত্রী যদি খারাপ কিছু একটা করে ফেলে সেই আতঙ্ক থেকে মিথ্যা বলেছিলেন তিনি।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

Loading


শিরোনাম বিএনএ