28 C
আবহাওয়া
৯:৫৩ অপরাহ্ণ - জুলাই ৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেন মিজানুর রহমান মজুমদার

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেন মিজানুর রহমান মজুমদার


বিএনএ, ঢাকা: ফেনী-১ (পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া) আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মিজানুর রহমান মজুমদার। তিনি বর্তমানে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সাবেক সদস্য।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। এদিন সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

 

মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনের পর এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়নি। তাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতিকে উপহার দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এক নজরে মিজানুর রহমান মজুমদারের আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে পদার্পন:

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে সামরিক শাসন থাকায় গণতন্ত্র চর্চা ব্যাহত হয়। সারাদেশে উত্থান হয় সাম্প্রদায়িক শক্তির। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের দখলে চলে যায়। বন্ধ হয়ে যায় মুক্তবুদ্ধির চর্চা। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলে। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে চাকসু নির্বাচনে ছাত্র ঐক্য পরিষদ জয় লাভ করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াত-শিবির বিরোধী রাজনৈতিকছাত্র সংগঠনটি (ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ) প্রতিষ্ঠার অন্যতম নেপথ্য সংগঠক ছিলেন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদার। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০০৩ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলার সদস্য ছিলেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার সময় মিজানুর রহমান মজুমদার চট্টগ্রামে বসবাসকারী ফেনী জেলার যে সকল আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় নেতাদের সহযোদ্ধা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফেনী-২ আসনের বর্তমান এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি  আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য  মনজুর আলম শাহীন প্রমুখ। দীর্ঘ সাংগঠনিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদারকে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করা হয়।

পারিবারিক  ও রাজনৈতিক পরিচয়:

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদারের পিতা সুলতান আহাম্মেদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪২ সালে মেট্রিকুলেশন (এসএসসি)পাশ করেন। অতপর ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৫৪ সালে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালে ৬ দফা, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন সর্বোপরি একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় সংগঠক হিসেবে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করেন। সুলতান আহাম্মেদ ১৯৬৭-১৯৬৮ সালে ছাগলনাইয়া আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের ত্রিপুরার নলুয়া সীমান্ত এলাকার কাছে অবস্থিত সুলতানআহাম্মেদের উত্তর যশপুর বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। নিরাপদে যুদ্ধ করার জন্য পুকুরপাড় ও আশেপাশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২৯টি বাঙ্কার ক্যাম্প স্থাপন করেন সুলতান আহাম্মেদ। তৎকালীন ইপিআর, আনসার, সামরিক বাহিনীর সদস্য ও অন্যান্য শ্রেণি পেশার যুবকদের সমন্বয়ে গঠিত ৩৬০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি টিম সেখানে অবস্থান করেন। সুলতান আহাম্মেদ মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার পাশাপাশি অর্থ ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। সে কারণে ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট পাক সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা সুলতান আহাম্মদএরহাজী বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে এবং জ্বালিয়ে দেয় পুরো বাড়ি। মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদারের পিতা সুলতান আহাম্মেদ, চাচা সফিকুর রহমান, বড় ভাই আবুল কালাম আজাদসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন ১৯৭১ সালের ২ ও ৩ ডিসেম্বর ফেনী সীমান্তে মহামায়া যুদ্ধ নামে খ্যাত ভয়াবহ যুদ্ধে অংশ নেন। এ যুদ্ধে তার অপর চাচা আব্দুর রশিদ পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।

উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে জানায় ইসি।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ