বিএনএ, বিশ্বডেস্ক : ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। বুধবার গাজার রাফায় প্রাণ হারান তিনি, তবে ইসরায়েলি সেনারা জানত না তারা সিনওয়ারকে হত্যা করেছে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ৭ অক্টোবরের গণহত্যা ও নৃশংসতার জন্য দায়ী ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরায়েলি সামরিক সৈন্যদের হাতে নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস প্রধানের হত্যা মানে যুদ্ধের সমাপ্তি নয়। তিনি এটিকে গাজায় বছরব্যাপী যুদ্ধ “শেষের সূচনা” বলেছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে বুধবার গাজার রাফাহ শহরের একটি ভবনে অভিযান চালানো হয়েছিলো। ধারণা করা হয়েছিলো যে ওই ভবনটি হামাসের সিনিয়র নেতারা ব্যবহার করেন। সেই অভিযানে তিনজন নিহত হন, সিনওয়ার তাদের মাঝে একজন।
বাহিনী আরও জানায় যে ওই স্থানে জিম্মির কোনও চিহ্ন নেই। পূর্বে দাবি করা হয়েছিলো যে জিম্মিদের সুরক্ষার স্বার্থে সিনওয়ার ভ্রমণের সময় তাদেরকে নিজের সাথে রাখবে।
কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার?
ইয়াহিয়া সিনওয়ার ১৯৬২ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী ক্যাম্পে জন্ম গ্রহণ করেন।
তার পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল মাজদাল আসকালানে। পরবর্তীতে দখলদার ইসরায়েল যার নাম দেয় আসকেলন। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের ভোটাভুটির মাধ্যমে ইসরায়েলের সৃষ্টি হওয়ার পর সিনওয়ারের পরিবারকে মাজদাল আসকালান ছেড়ে গাজার খান ইউনিসে চলে যেতে হয়। সেখানে শরণার্থী হিসেবে জীবন শুরু করেন তারা।
সিনওয়ার তার জীবনের ২২ বছর দখলদার ইসরায়েলের কারাগারে ছিলেন। ১৯৮৮ সালে দুই ইসরায়েলি সেনাকে জিম্মি এবং তাদের হত্যা করায় সিনওয়ারকে আটক করা হয়েছিল। ২০১১ সালে বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি পান তিনি।
সিনওয়ার যখন কারাগারে ছিলেন তখন ইসরায়েলি সরকার তাকে পর্যবেক্ষণ করে বলেছিল, তিনি ‘দয়ামায়াহীন’ এবং ‘শক্তিশালী’।
ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি থাকার সময় হিব্রু ভাষা আয়ত্ত করেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার।
২০১৭ সালে হামাসের গাজা শাখার প্রধান হন তিনি। এরপর চলতি বছরের জুলাইয়ে ইসমাইল হানিয়া যখন গুপ্তহত্যার শিকার হন তখন তিনি হামাসের প্রধান নেতার দায়িত্ব পান।
দখলদার ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর যে হামলা চালানো হয় সেটির ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হয় সিনওয়ারকে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম/ হাসনা