বাণিজ্য ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশকে অন্তত ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে হবে। কিন্তু বর্তমানে তা ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ করে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণ পদ্ধতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বাড়তি তিন মাস সময় চাওয়া হয়। ঢাকা সফররত আইএমএফ মিশন সরকারের এ দুটি অনুরোধ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় শর্ত বাস্তবায়ন ও দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গত ৪ অক্টোবর সংস্থাটির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি স্টাফ মিশন ঢাকায় আসে। মিশনটি গত সোমবার পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে। গতকাল মঙ্গলবার স্টাফ মিশন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আবারও বৈঠক করে।
সূত্র জানায়, সফররত মিশনের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ডিসেম্বর নাগাদ রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার অনুরোধ করেছে। প্রতিনিধি দল প্রাথমিকভাবে এ শর্তে ছাড় দেওয়ার সম্মতি দিয়েছে। তবে নতুন লক্ষ্যমাত্রা কত হবে, সে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে। গতকাল মিশনটি তাদের খসড়া প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে জানা গেছে।
আইএমএফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ রাষ্ট্র খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত মাত্র তিন সময়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি নতুন করে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে, যা উদ্বেগজনক মনে করছে মিশন। বিশেষ করে সরকারি ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ২৫ শতাংশের বেশি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রতিনিধি দল। খেলাপি ঋণ দ্রুত কমিয়ে আনতে সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।
এদিকে বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার কিছুটা বাজারভিত্তিক করা হলেও তা পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিনিধি দল। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক ঋণে সুদহার বাড়ানোর সুপারিশও তারা করেছে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ