এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুসরাত হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন শাহানাজ খান, জান্নাতুল মাওয়া মুন্নি, সাদিয়া আফরিন, আমেনা বেগম, মনোয়ারা বেগম সাকি ও নার্গিস রিক্তা প্রমুখসহ বিপুল সংখ্যক চিটাগাং উইমেন চেম্বার সদস্য ।
লিখিত বক্তব্যে নুসরাত হোসাইন জানান, দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দ্যেলনের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ছাত্র জনতা মিলে স্বৈরাচারি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যে অভূতপূর্ব সংগ্রাম গড়ে তুলেছেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগতিতিক্ষার বিনিময়ে সেই সংগ্রাম পূর্ণতা পেয়েছে। এতেই প্রমানিত হয় জনগণের শক্তির কাছে কোনো স্বৈরশাসকই টিকে থাকতে পারে না। দীর্ঘ ১৫ বছর পর আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ফ্যাসিবাদের অক্টোপাশ থেকে মুক্ত হয়েছে। হাজারো ছাত্র জনতার প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ আজ আবার নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
লিখিত বক্তব্যে নুসরাত হোসাইন জানান, বছরের পর বছর ধরে চিটাগাং উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভোটবিহীন কমিটি দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই সিডব্লিউসিসিআই এর পরিচালনা কমিটি ও সভাপতি নির্বাচন সিলেকশন প্রক্রিয়ায় হয়ে আসছে। যেখানে সাধারণ সদস্যদের কোন অংশগ্রহণ নেই এবং তাদের মতামতের তোয়াক্কা না করে দুএকজন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন কে কোন পদে থাকবেন।
লিখিত বক্তব্যে নুসরাত হোসাইন আরও জানান, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার একটি নারী উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য সংগঠন। বিগত কমিটিগুলো এই সংগঠনে তৃনমূল ব্যবসায়ীদের সুযোগ না দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে আসছে। এক্ষেত্রে তৃনমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমানে উইম্যান চেম্বারের প্রারম্ভিক সদস্য ফি ৩৭০০ টাকা এবং প্রতিবছর নবায়ন ফি ১৯০০ টাকা, যা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বান্ধব নয়। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ট্রেডে ট্রেইনার হিসেবে সদস্যদের সুযোগ দেয়া হয় না।
চেম্বারের সদস্যদের থেকেও বিভিন্ন ট্রেনিং এর নাম দিয়ে ফি আদায় করা হয়। দিনব্যাপি ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। উইম্যান ট্রেড ফেয়ারে সদস্যদের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয় লোকসমাগম কম হয় এমন জায়গায় ও বাধ্যতামূলক দুটো করে দোকান বরাদ্ধ দেয়া হয়। এছাড়াও সদস্যদের কাছ থেকেও মেলায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ও সিকিউরিটি বিল আদায় করা হয়। বিগত কয়েকবছর যাবত উইম্যান ট্রেড ফেয়ার নারী উদ্যোক্তা বান্ধব না হওয়ায় অন্যান্য জেলার নারী উদ্যোক্তারা মেলায় অংশগ্রহন করে নি এবং দিন দিন স্থানীয় উদ্যোক্তা হ্রাস পাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে নুসরাত হোসাইন জানান, যারা রাত নিন রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মেলার মাঠে স্টল সাজিয়ে পন্য বিক্রি করে সেই অর্থে জীবন নির্বাহ করে সংসার চালিয়ে থাকেন এবং যাদেরকে দেখিয়ে ওমেন চেম্বার অব কমার্স বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন, সবসময় তারাই অবহেলিত। এর ফলে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা।
নুসরাত হোসাইন উইমেন চেম্বার পরিচালনা নীতি সংস্কার করার দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বলেন, ক্ষুদ্র নারী উদ্যক্তারা যদি ঠিকভাবে ব্যবসা করতে না পারে, তাহলে তাদের পক্ষে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ চাই। তাই চেম্বারের বর্তমান সদস্য তালিকা যাচাই করে সর্বসম্মত ভোটার তালিকা তৈরি পূর্বক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে চিটাগাং উইমেন চেম্বারের নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির আহবান জানান।
/এইচমুন্নী