বিএনএ, চট্রগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়য়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পিএএ বলেন, আমি আশা করি রাষ্ট্র ও জনগণের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আইন দ্বারা এই পরিবর্তন সম্ভব নয়।
শনিবার (১৮সেপ্টেম্ববর) সকালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্রগ্রাম কেন্দ্র কর্তৃক আয়োজিত প্রথম আন্তঃকলেজ জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার (চট্রগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত) ফাইনাল অনুষ্ঠানে পুরষ্কার বিতরণী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেন সম্মানিত সকলের প্রতিশ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ চট্রগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সুন্দর এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য। বিতর্কের বিষয় বস্তু ছিল সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান অন্তরায়। এই প্রতিযোগিতাকে খুবই আর্কষণীয় বলে উল্লেখ করে পক্ষ ও বিপক্ষের উভয়ের বক্তব্য যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, বিতর্কের সময় ও নিয়ম কানুন সুনির্দিষ্ট । আজকের বিতর্ক পাঁচ মিনিটের পরিবর্তে দশ মিনিট হলে বিতর্কিতদের পটেনশিয়ালিটি দেখানোর সুযোগ আরও বেশি থাকত এবং আমরা বেশি উপকৃত হতাম। বিতর্কিতদের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মণ্ডলীদের সবাইকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, পার্টিসিপেশন ইজ ভেরি ইম্পরট্যান্ট। উভয় টিমই অনেক প্রস্তুতি নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। তাদের লক্ষ্য স্থির থাকলে সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবে এবং বহু ডিবেট ক্লাব আছে সেখান থেকে ও তারা ভবিষ্যতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আজকের বিষয়ের অন্যতম প্রধান দিক ছিল দৃষ্টিভঙ্গি বা মাইন্ড – সেটআপ। আজ থেকে চৌদ্দশ বছর পূর্বে যখন ধর্ম প্রচার শুরু হয়েছিল তখনও “দৃষ্টিভঙ্গি” এই বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছিল। রাষ্ট্র জনগণের জন্য যত আইন তৈরি করুক না কেন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলে কোন সমাধান সম্ভব নয়। বাল্য বিবাহসহ বহু আইন তৈরি হয়েছে নারীদের জন্য, কিন্তু সবকিছুর জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্রগ্রাম কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে নটরডেম কলেজ, ঢাকা এবং ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, চট্রগ্রাম। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ বাদল সৈয়দ, কথাসাহিত্যিক ও সমাজকর্মী, মাহফুজ মিশু, বিশেষ প্রতিনিধি, যমুনা টেলিভিশন ও সাবেক সম্পাদক বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন, বিজয় বসাক,বিপিএম(বার), উপ-পুলিশ কমিশনার(দক্ষিণ), চট্রগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে নটরডেম কলেজ, ঢাকা। শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ আবিদ মাহমুদ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক জনাব সোহরাব হোসেন বলেন, অত্যন্ত সুন্দর বিষয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা সমুদ্রসীমার ক্ষেত্রে বিজয় লাভ করতে পেরেছি তথ্য প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে। আজকে যারা বিজয়ী হয়েছেন তারাও তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তি তর্কের মাধ্যমে জয়ী হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী পত্রিকার সম্পাদক এম.এ.মালেক বলেন, বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা হল আজাদী। বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্রগ্রাম কেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মত আন্তঃ কলেজ জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একইসাথে আজকের অনুষ্ঠানে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের সকলকে তিনি ধন্যবাদ জানান এবং পার্টিসিপেশন ছাড়া কোন কিছু সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্রগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্রাচার্য। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, একুশে পদক প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, বিটিভির উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ খাস্তগীরসহ চট্রগ্রামের বিশিষ্ট সাংবাদিক, গণমাধ্যমকর্মী, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। তথ্যবিবরণী