ঢাকা : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারে পুলিশের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে মোহাম্মদ সিয়াম (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) দিবাগত মধ্যরাতে মৃত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় এ নিয়ে ঢাকায় তিনজনের মৃত্যু হলো। আর পুরো দেশে এ সংখ্যা ৭।
সিয়ামের খালাতো ভাই মোহাম্মদ রাসেল জানান , ‘সিয়াম গুলিস্তানের এক ব্যাটারির দোকানের কর্মচারী ছিল। রাতে বাসায় ফেরার পথে হানিফ ফ্লাইওভারে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিয়াম মারা যায়।’
নিহত সিয়ামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। সে মাতুয়াইলে থাকত বলে জানা গেছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিতে এক তরুণকে আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। যারা নিয়ে এসেছিল তারা বুঝতে পারে সিয়াম নামে ওই তরুণ মারা গেছে। এজন্য তারা আর হাসপাতালে ভিতরে না ঢুকিয়ে সিএনজিতে করে মরদেহ নিয়ে চলে গেছে।’
এদিকে দিনের বেলায় যাত্রাবাড়িতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে যাত্রাবাড়ী এলাকা।
এ সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয়। দফায় দফায় এ সংঘর্ষে দুই বছরের এক শিশুসহ অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
দুপুরে হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজার কাছে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়ে পুলিশ।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, দনিয়ার বাসিন্দা বাবু মিয়া (৫০) ও তার দুই বছরের শিশু রহিত মিয়া এবং শনির আখড়া থেকে পথচারী পিয়াস (১৭), মনিরুল (২০), সোহাগ (২৭) ও ফয়সাল (১৮)।
এদের মধ্যে ফয়সালের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।গুলিবিদ্ধ শিশু রহিত মিয়ার মা লিপি আক্তার বলেন, ‘আমি আমার স্বামী বাবু মিয়া ও দুই বছরের সন্তান নিয়ে পাঁচতলা ভবনের নিচে ঘরের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ ছররা গুলি এসে আমার স্বামী ও সন্তান রোহিত মিয়ার শরীরে লাগে।’
আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরপর সন্ধ্যার পর আবারও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আন্দোলনকারীরা। এ সময় হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা।
বিএনএ,আহা, এসজিএন