বিএনএ, সীতাকুণ্ড: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আসামী ধরতে গিয়ে গৃহবধূর ওপর শারীরিক নির্যাতন ও আলমারি থেকে টাকা,স্বর্ণালংকার এবং মুঠোফোন লুট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মাহবুব মোরশেদকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আশরাফুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল রোববার(১৭ এপ্রিল) পুলিশের নির্যাতনের শিকার হওয়া গৃহবধূ খালেদা আক্তার চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবরে উপ পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব মোরশেদের বিরুদ্ধে মারধর ও টাকা,স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ আনেন। পাশাপাশি অভিযোগের অনুলিপি সীতাকুণ্ড সার্কেলের অ্যাডিশনাল এসপি ও সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবে জমা দেন।
দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ভাটেরখীল এলাকার বাসিন্দা একটি মামলার পরোয়ানাভূক্ত আসামি নুরুল ইসলামকে (৫০) গ্রেপ্তার করতে শনিবার দুপুরে তার বাড়িতে যান সীতাকুণ্ড থানার উপ পরিদর্শক (এস.আই) মাহবুব মোর্শেদ। এ সময় তার সাথে যান পুলিশ সোর্স মো.নুরুজ্জামানসহ (৪৫) দু’জন পুলিশ সদস্য। সাদা পোশাকে থাকা চারজনের মধ্যে এসআই মাহবুব ও সোর্স নুরুজ্জামান নুরুল ইসলামের ঘরে প্রবেশ করে তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী খালেদা আক্তারের কাছে আলমারির চাবি কোথায় জানতে চান। তিনি চাবি দিতে না চাইলে মাহবুব ক্ষিপ্ত হয়ে খালেদাকে উপর্যপুরি লাথি মারেন। শারিরিক নির্যাতন সইতে না পেরে খালেদা চাবি দিলে মাহবুব ও নুরুজ্জামান আলমারিতে থাকা এক লাখ ৪২ হাজার টাকা ও আট আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, দুটি মুঠোফোন তার ছেলে-মেয়েদের সার্টিফেকট,জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র ও ইসলামী ব্যাংকে লেনদেনের কাগজপত্র প্রভৃতি নিয়ে যান। এসময় তার ছেলে রিয়াজ উদ্দিন সার্টিফিকেট নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাকেও বেশ কয়েকটি চড় থাপ্পর মারেন এবং তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দেন।
গৃহবধূ খালেদা আক্তার বলেন,তিনি এ ঘটনার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। বিষয়টির প্রতিকার পেতে রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিকালে তিনি থানায় অভিযোগের অনুলিপি জমা দিতে গেলে প্রথমে তা না নিয়ে তাকে থানা থেকে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তিনি তাতে অসম্মতি জানানোর পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব মোরশেদ বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি ওই বাড়িতে যাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার করতে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। আমরাও তাকে ধাওয়া করি। তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতে ছায়া তদন্ত করে দেখতে বলেন। পরোয়ানাভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে যদি এ রকম ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়,তাহলে আর চাকরি করা যাবে না।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো.আশরাফুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এস আই) মাহবুব মোরশেদকে সীতাকুণ্ড থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিএনএ/ সবুজ শর্মা শাকিল,ওজি