বিনোদন ডেস্ক: চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের চিত্রনায়ক ওয়াসিম শনিবার (১৭ এপ্রিল) দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নামে চলচ্চিত্র অঙ্গনে।
বরেণ্য এই অভিনেতা ছিলেন বডিবিল্ডার। তার প্রকৃত নাম মেজবাহউদ্দীন আহমেদ। চলচ্চিত্রে এসে হয়ে যান ওয়াসিম। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডিবিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডিবিল্ডিংয়ের জন্য মি. ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন। ওয়াসিম ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭২ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এস এম শফীর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। প্রথম দেখাতেই এই নির্মাতা তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। শফীর আগ্রহেই ১৯৭২ সালে তার পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। এতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন। ১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। এরপরই চলচ্চিত্রটির অসামান্য সাফল্যে রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান তিনি।
১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ওয়াসিম অভিনীত ও এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ তাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। পৃথিবীর ৪৬টি দেশে ‘দি রেইন’ মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাটি বাম্পার হিট হয় আর ওয়াসিমকে অভিনেতা হিসেবে পৌঁছে দেয় অনন্য উচ্চতায়। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঢাকার চলচ্চিত্রে ওয়াসিম ছিলেন শীর্ষ নায়কদের একজন। ফোক, ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ঘরনার সিনেমায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী ড্যাশিং হিরো। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ওয়াসিমের তখন একচেটিয়া রাজত্ব। তার ক্যারিয়ারে ১৫২টি সিনেমায় অভিনয় করেন। যার প্রায় সবগুলোই ব্যবসা সফল ছিল।
ওয়াসিম দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে দূরে ছিলেন। ব্রেন, নার্ভ ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন বরেণ্য অভিনেতা ওয়াসিম। অসুস্থ হওয়ার পর তাকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলেন। কারণ, দেশে করোনার যে পরিস্থিতি তাতে হাসপাতালে রাখা নিরাপদ নয়।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ