বিএনএ, ঢাকা: জনপ্রিয় অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুর পরদিনই বাংলা সিনেমার এক জনপ্রিয় নায়ক ওয়াসিম(৭১) ইন্তেকাল করেছেন।শনিবার(১৭ এপ্রিল)দিবাগত রাত ১২টা ৩০ মিনিটে সাহবউদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন(ইন্না লিল্লাহি রাজিউন)।পরপর দুদিন দুজন প্রখ্যাত অভিনেতা নেত্রীর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ঢাকাই চলচ্চিত্র জগতের এই সুপারস্টার কিছুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।ওয়াসিম পড়াশোনায় ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ছিলেন। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিং এর জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেন।
সিনেমায় অভিষেক
প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এস এম শফীর হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক ঘটে ওয়াসিমের। ১৯৭২ সালে শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। এতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন। ১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ তার। চলচ্চিত্রটির অসামান্য সাফল্যে রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান তিনি।দিন যতই যেতে থাকে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা ততই আকাশচুম্বী হয়। এক সময় বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমায় অপরিহার্য নায়ক হয়ে ওঠেছিলেন তিনি।
দেড়শ’র মতো ছায়াছবির নায়ক
ওয়াসিম দেড়শ’র মতো ছবিতে নায়ক ছিলেন। হাতেগোনা অল্প কিছু ছবি ছাড়া প্রতিটি ছবিই সুপারহিট হয়েছিল। ‘দি রেইন’ তাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সেদিন। পৃথিবীর ৪৬টি দেশে ‘দি রেইন’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিতে ওয়াসিমের নায়িকা অলিভিয়া। পরবর্তী সময়ে ওয়াসিম-অলিভিয়া জুটি বেঁধে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন। ‘বাহাদুর’ এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন প্রভৃতিও সফল হয়েছিল। শাবানা, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষ, সুজাতা প্রমুখের বিপরীতেও তিনি অভিনয় করেছিলেন। তবে শাবানা আর অলিভিয়ার সঙ্গে ওয়াসিম যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন তার প্রতিটিই ব্যবসাসফল হয়েছিল। ‘রাজ দুলারী’তে ওয়াসিম ও শাবানার অভিনয় সেদিন দর্শকদের দারুণ মুগ্ধ করেছিল। ছবিতে তাদের মুখের গানগুলো ছিল দর্শকের মুখে মুখে ফেরে।
ব্যক্তিগত জীবন
ওয়াসিম ১৯৫০সালের ২৩ মার্চ চাদপুর জেলার বর্তমান মতলব উপজেলায় জম্মগ্রহণ করেন। ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের সংসারে দু সন্তান জম্ম নেয়। পুত্র দেওয়ান ফারদিন এবং কন্য বুশরা আহমেদ। ২০০০ সালে তার স্ত্রী, ২০০৬ সালে কন্যা বুশরা আহমেদ এর অকালমৃত্যু ঘটে।পুত্র ফারদিন ব্যারিস্টার হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।
বিএনএনিউজ২৪/আর আরখান,এসজিএন