বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর । আজ থাকছে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের হালচাল।
চট্টগ্রাম-১৫ আসনের হালচাল
চট্টগ্রাম-১৫ সংসদীয় আসনটি লোহাগাড়া উপজেলা এবং সাতকানিয়া উপজেলার চরতি, নলুয়া, কাঞ্চনা, আমিলাইশ, এওচিয়া, মাদার্শা, ঢেমশা, পশ্চিম ঢেমশা, ছদাহা ও সোনাকানিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯২ তম আসন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চট্টগ্রাম-১৪ নামে পরিচত ছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের সীমানা পূন:নির্ধারনে পর আসনটি চট্টগ্রাম-১৫ নামে পরিচয় বহন করছে।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী বিজয়ী হন
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭৫ হাজার ১ শত ৬২ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩৬ হাজার ১ শত ৫০ জন। নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৬২ হাজার ৮ শত ৯৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪০ হাজার ৬ শত ৫৯ ভোট ।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন : বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়।। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
সপ্তম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ বিজয়ী হন
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩ শত ৫৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৫ হাজার ৮ শত ৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী । দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৪১ হাজার ৮ শত ৬০ ভোট।
অষ্টম সংসদ নির্বাচন: জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন
২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ১৫ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ২০ হাজার ৮ শত ৯১ জন। নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৫ হাজার ৭ শত ৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৪ হাজার ১ শত ৮৪ ভোট।
নবম সংসদ নির্বাচন: জামায়াতে ইসলামীর এম শামসুল ইসলাম বিজয়ী হন
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৫ শত ৬০ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৫ জন। নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর এম শামসুল ইসলাম বিজয়ী হন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২০ হাজার ৩ শত ৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন এলডিপির অলি আহমেদ । ছাতা প্রতীকে তিনি পান ৬৩ হাজার ৪ শত ১২ ভোট।
দশম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী বিজয়ী হন
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১ হাজার ৮ শত ৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ এর জয়নাল আবেদীন কাদেরী । টেলিভিশন প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৪ হাজার ৪ শত ৪৮ ভোট।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী বিজয়ী হন
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১ শত ৩৫ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ২০ হাজার ৩ শত ১৩ জন।
নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির আ ন ম শামসুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নুরুল আলম, উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গনফোরামের আবদুল মোমেন চৌধুরী এবং আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির ফজলুল হক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩ শত ৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির আ ন ম শামসুল ইসলাম । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৫৩ হাজার ৯ শত ৮৬ ভোট।
কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ ও সপ্তম সংসদে বিএনপি, পঞ্চম, অষ্টম ও নবম সংসদে জামায়াতে ইসলামী এবং দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।
দৈবচয়ন পদ্ধতি
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৫ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪৯.৪৮% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৯.৮৬%, বিএনপি ২২.৮৮%, জামায়াত ইসলামী ৪৬.২০% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.০৬% ভোট পায়।
১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭০.৫৪% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২.৫২%, বিএনপি ৪৮.২১%, জাতীয় পার্টি ০.৭৭%, জামায়াত ইসলামী ২৬.৬০% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৯০% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৪.৬২% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২.১৫%, ৪ দলীয় জোট ৪৭.৮৮%, জাতীয় পার্টি ০.৫৫% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২৯.৪২% ভোট পায়।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৭.২৪% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ২০.৯৬%, ৪ দলীয় জোট ৫০.৯৯%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২৮.০৫% ভোট পায়।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও মনোনয়ন তালিকায় আছেন অন্তত: অর্ধ ডজন প্রার্থী। এদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান।
নির্বাচন কমিশন গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। বিএনপি তফসিল প্রত্যাখান করেছে। এই অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই। তবে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন- চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসহাব উদ্দীন চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাতকানিয়া বিএনপির সাবেক সভাপতি মুজিবর রহমান।
এলডিপি নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যদি নির্বাচনে যায়, এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন দলীয় প্রধান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ।
জামায়াত ইসলামী থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী অথবা সাবেক সংসদ সদস্য এম শামসুল ইসলাম।
তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৫ আসনটি আওয়ামী লীগ বিরোধী ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচন থেকে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই আসনে আওয়ামী লীগ কোন নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারে নি। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এম, সিদ্দিক, ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, ১৯৯৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইব্রাহীম বিন খলিল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী, ১৯৯৬ সালের ষষ্ট ও সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অলি আহমেদ বিজয়ী হন । ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামী থেকে শাহজাহান চৌধুরী এবং ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে সামশুল ইসলাম বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অংশগ্রহণ করেনি। ফলে দীর্ঘ ৪১ বছর পর খুব সহজে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। সংসদ সদস্য হন অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী । যা ২০১৮ সালের একাদশ সংসদেও অব্যাহত থাকে।
তবে এই আসনে আওয়ামী লীগ ব্যক্তি নির্ভর অন্তদলীয় কোন্দলে তিন গ্রুপে বিভক্ত। নির্বাচনকে সামনে নিয়ে এই কোন্দল আরও তীব্র হয়েছে। কোন্দল নেই, বিএনপিতে। এই আসনটি জামায়াত ইসলামীর ঘাঁটি হিসাবে চিহ্নিত।
২০১৩ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তিনদিন পর জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চাঁদে দেখা যাওয়ার গুজব ছড়িয়ে যে তান্ডব চলেছিল, তার সূত্রপাত এই সাতকানিয়া-লোহাগাড়াতেই। এর পরের বছর ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গাছ কেটে অবরোধ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাংচুরের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে এই সংসদীয় এলাকায়। ঘটিয়েছে জামায়াত ইসলামী ও ছাত্রশিবির।
দীর্ঘ সময় ধরে এলাকাটির ওপর ছিল জামায়াতের আধিপত্য। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট থেকে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে মনোনয়ন পেয়ে আসছিল জামায়াতের প্রার্থী। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশিবার জামায়াত যে আসনটি জিতেছিল সেটি এই আসন। তবে গত দুই মেয়াদে নৌকা প্রতীকের জয়লাভের পর আওয়ামী লীগ এ সংসদীয় আসনে তার সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করে নিয়েছে। এরপরও আসনটিতে নির্ভার নয় আওয়ামী লীগ।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে, বিএনপি-জামায়াত ইসলামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের ২৯২ তম (চট্টগ্রাম-১৫) সংসদীয় আসনটিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনএ/ শাম্মী, রেহানা, এমএফ, ওয়াইএইচ