বিএনএ, ঢাকা: দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় সংসদ কর্তৃক “সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩” পাশ করা হয়েছে এবং গত ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
উক্ত আইনের আলোকে গঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।.
উল্লেখযোগ্য বৈশিস্ট্য
জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরিয়া ১৮ (আঠারো) বৎসর তদূর্ধ্ব বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রণ করিতে পারিবে;
তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর উর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হইতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হইবেন সেই বয়স হইতে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হইবেন;
বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত হইতে পারিবেন;
প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকিবে;
পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পচাঁত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্ত হইবেন;
চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে; এবং পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করিয়া কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হইবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকিবে।
দেশের সাধারণ মানুষকে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনতে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) চালু করেছে সরকার। আজ থেকেই ৫০ বছরের কম বয়সী সবার জন্য এ সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত হয়েছে।
১. সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা কি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবে?
সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির আগে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা সরকারি পেনশন স্কিমে অংশ নিতে করতে পারবেন না।
২. পেনশন স্কিমে মুনাফাসহ বছরে কত টাকা জমা হলো তা কীভাবে জানা যাবে?
চাঁদাদাতা তার পেনশন আইডি দিয়ে ইউনিভার্সাল পেনশন সিস্টেমে প্রবেশ করে সহজেই বছর শেষে মুনাফাসহ জমা হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবেন।
৩. চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর নিতে হবে কি না?
চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর গ্রহণ করতে হবে না। শুধু জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
৪. চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তিনি কীভাবে পেনশন পাবেন?
চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তার ব্যাংক হিসাবে অথবা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে মাসিক পেনশন দেওয়া হবে।
৫. শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করলেই পেনশন স্কিমে অংশ নেওয়া যাবে, নাকি হার্ড কপি জমা দিতে হবে?
হার্ড কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করে মাসিক টাকা জমা দিলেই হবে।
৬. গৃহিণীরা কোন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন?
গৃহিণীরা স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষা স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।
৭. প্রবাস স্কিমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করার পর কত দিনের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে?
এনআইডি তৈরিতে যুক্তিগতভাবে সে সময়ের প্রয়োজন হবে, সেই সময়কালের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে।
৮. জাতীয় পেনশন স্কিমের যাবতীয় ব্যয় কি স্কিমে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জমানো টাকা দিয়ে মেটানো হবে?
না, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় ব্যয় সরকার বহন করবে।
৯. কোনো ব্যক্তির কাছে মাসিক চাঁদার টাকা নগদ দেওয়া যাবে কি না?
না, কোন ব্যক্তির কাছে চাঁদার টাকা নগদ জমা দেওয়া যাবে না। ব্যাংক, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে চাঁদার টাকা জমা দেওয়া যাবে।
১০. পেনশন স্কিমে জমা হওয়া টাকার গ্যারান্টর কে হবেন?
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারই জমা টাকার গ্যারান্টর।
১১. চাঁদাদাতা, নমিনি বা নমিনিরা মেয়াদ পূর্তির আগে মারা গেলে জমা টাকা কে পাবেন?
সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ও উত্তরাধিকার সনদের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে জমা টাকা মুনাফাসহ তাকে বা তাদের দেওয়া হবে।
ক্লিক করুন নিচের লিংকে
সূত্র: https://www.upension.gov.bd/Public
বিএনএনিউজ২৪,জিএন