24 C
আবহাওয়া
১০:০৪ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু, বেশি শনাক্ত এ মাসেই

নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু, বেশি শনাক্ত এ মাসেই


বিএনএ, ঢাকা : কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু। ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২০০ জনের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত সাত মাসে দেশে যে পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি শনাক্ত হয়েছে চলতি মাসের ১৭ দিনে। জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৬৫৮ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আগস্ট মাসের ১৫ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৯৯২ জন। আর গত সাত মাসে মারা গেছেন ২৬ জন।

এদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত জ্বর হলেই বেশিরভাগ মানুষই চিকিৎসকদের কাছে বা হাসপাতালে যেতে আগ্রহ থাকে না। বাসায় থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করেন। যে কারণে অনেকে বুঝতেও পারেন না ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় না, এমন রোগীর সংখ্যাও অনেক। তবে সেই রোগীর কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তাদের মধ্যে ৮০-৯০ শতাংশ রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় অবস্থান করে থাকেন।

সূত্রমতে, সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস হচ্ছে ডেঙ্গু ছড়ানোর মৌসুম। তবে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এর তেমন কোনো প্রকোপ দেখা যায়নি। কিন্তু জুন থেকে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে। দেশের ডেঙ্গু রোগীর তথ্য সংগ্রহ করে থাকে অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুম। ঢাকা শহরের ১২টি সরকারি, ২৯টি বেসরকারি হাসপাতালসহ মোট ৪১টি হাসপাতাল থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করে। এ ছাড়া দেশের ৬৪টি জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

কন্ট্রোল রুমের তথ্যে দেখা গেছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে ৩২৯ জন ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতেই ৩০৬ জন। গত জুনয়ারি থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৩৫০ জন। ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ২৬ জন মারা গেছেন। যাদের মৃত্যু তথ্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইডিসিআর) জমা হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের ১ হাজার ১১৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ৫ হাজার ৫১০ জন বাড়ি ফিরেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির বলেন, এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে এডিস মশার উপদ্রব বাড়তি থাকে। সুতরাং বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের মৌসুম চলছে। প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। তাই এডিস মশা যেন বংশবিস্তার করতে না পারে, সে জন্য ঘরের ভেতর ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। দিনের বেলায় বাসাবাড়িতে মশানাশক স্প্রে করে দরজা-জানালা কিছুক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া মশক নিধনে পদক্ষেপ নিতে হবে সিটি করপোরেশনকেও। তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু আর করোনার উপসর্গের মধ্যে মিল আছে। সে কারণে কারও জ্বর, শরীরে ব্যথা হলে দুটি রোগের পরীক্ষা একসঙ্গেই করাতে হবে। এর পর ডেঙ্গু বা করোনা যেটাই শনাক্ত হয়ম, তার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বংশবিস্তারের সঙ্গে দুটো জিনিসের সম্পর্ক রয়েছে। একটি হচ্ছে থেমে থেমে বৃষ্টি ও অন্যটি আমাদের বাড়ির ভেতর বা বাইরে পানি জমে থাকা। এই জায়গাগুলোয় এডিস মশার লার্ভার জন্ম হয়। এই লার্ভা যেন না হতে পারে সে জন্য পানি জমতে দেওয়া যাবে না। যেখানে পানি জমে, সেখানে লার্ভা নিধনে লার্ভিসাইট স্প্রে করতে হবে।

বিএনএ/ আজিজুল, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ