স্পোর্টস ডেস্ক: কতদিন রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে পিষ্ট হয়েছে বাংলাদেশ! ইনিংস ব্যবধানে হারের রেকর্ডও তো কম নয়! নিজেদের সেই করুণ দিনগুলোর মতো প্রতিপক্ষকে বিশাল লক্ষ্য দেওয়ার পর কেমন অনুভূতি বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে? স্মৃতি হাতড়ে যা পাওয়া যায়, তা কিন্তু এবারের ঢাকা টেস্টের মতো বিলাসী কিছু নয়। মুমিনুলদের মুখের হাসি বলে দেয় স্বস্তির স্বাদ আস্বাদন করছেন তারা।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে এগিয়ে ছিল ২৩৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রান করলেও বিশ্ব রেকর্ড করে জিততে হতো আফগানিস্তানকে। মিরপুরের কন্ডিশনে যেটা অসম্ভব ব্যাপার। স্বাগতিকরা সেখানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৪ উইকেটে ৪২৫ রানে। সব মিলিয়ে ৬৬১ রানের লিড। অর্থাৎ চতুর্থ ইনিংসে আফগানিস্তানকে জয়ের জন্য করতে হবে ৬৬২ রান। যা প্রতিপক্ষকে দেওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টার্গেট। বিশ্ব রেকর্ড যেখানে ৪১৮ রানের, সেখানে সাড়ে ছয়শ রানের বেশি তাড়া করা টেস্টের নবীনতম সদস্য দেশের পক্ষে অসম্ভব একটা ব্যাপার। আফগানিস্তানকে এই টেস্টে বাঁচাতে পারে একমাত্র প্রকৃতি। এ ছাড়া বাংলাদেশকে জয় বঞ্চিত করতে পারবে না কেউ। সেদিক থেকে বলা যায়, জয়তো লেখা হয়েই গেছে, অপেক্ষা শুধু ব্যবধানের।
এক উইকেটে ১৩৪ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। জাকির ও শান্ত ৫৪ রান করে নিয়ে গতকাল তৃতীয় দিন শুরু করেন। সেই জুটি ভাঙে ১৭৪ রানে। টানা দুই ইনিংসে টপঅর্ডারের এমন সাফল্য আগে খুব একটা দেখা যায়নি। নাজমুলের শান্ত স্বভাবের ব্যাটিং রোমাঞ্চকর মুহূর্ত এনে দেয় মিরপুরে। প্রথম ইনিংসে ২ রানে আউট হন জাকির। তিনিই দ্বিতীয় ইনিংসে বড় জুটি গড়েন। ৯৫ বল খেলে ৭১ রানে আউট না হলে একটা রেকর্ডের সাক্ষী হতো মিরপুর। তিন টেস্ট খেলে দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা দেশের প্রথম ব্যাটার হতেন তিনি। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হওয়ায় মাইলফলকটি পাওয়া হয়নি তাঁর। তবে টানা তিন টেস্টে কোনো এক ইনিংসে পঞ্চাশের বেশি রান করে ধারাবাহিকতার তকমাটা জুটিয়ে নেন ঠিকই।
বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখার পর রানের উইকেট হয়ে গেছে ভাবার কারণ নেই। গতকালও স্বাগতিক বোলাররা দাপট দেখাতে পেরেছেন শেষ বেলা পর্যন্ত। শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ চার ওভার করে বোলিং করে দুটি উইকেটও শিকার করেন। ১১ ওভার শেষে দুই উইকেটে ৪৫ রান আফগানিস্তানের। লক্ষ্য থেকে এখনও ৬১৭ রান দূরে তারা। তিন দিনে ২৭০ ওভার খেলা হওয়ার কথা ছিল। গরম, বিরতি ও পেস বোলিং বেশি করায় বেশি সময় খেলিয়েও কোটা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ৫৪ ওভার কম খেলা হয় তিন দিনে। গতকাল ২০ ওভার কম খেলা হয়। তাই ম্যাচ শেষে স্লো ওভার রেটের কারণে জরিমানা গুনতে হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ