বিএনএ স্পোর্টস ডেস্ক: টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে এক অসুখী পরিবার তা নতুন করে বলতে হয় না। নিয়মিত বিরতিতে বার বার মাঠেই খেলোয়াড়রা বুঝিয়ে দেন সাদা পোশাকে তাদের নিবেদন, তাদের ভালোবাসা। গত মাসে ঢাকায় শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে একটা লজ্জা দিয়েছিল। ২৪ রান তুলতেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৫ উইকেট। পরবর্তীতে মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরির সুবাদে বাংলাদেশের স্কোর হয় ৩৬৫ রান। ইনিংসে ৬ ব্যাটসম্যানের শূন্য রানে আউট হওয়ার পর যা ছিল সর্বোচ্চ দলীয় রান।
ঢাকা থেকে অ্যান্টিগা। পৃথিবীর এপার-ওপার। বাংলাদেশের পারফরম্যান্স পাল্টায় না একটুও। এবার ৪৫ রান তুলতেই নেই ৬ উইকেট। শেষমেশ অলআউট ১০৩ রানে। এক মাসের ব্যবধানে ইনিংসে আবার ৬ ডাক। এমন হতশ্রী রেকর্ড পৃথিবীতে কারো দুবার নেই। বাংলাদেশেরই আছে তিন বার। প্রথমটা ২০০২ সালে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
ব্যাটিংয়ে এমন হতাশায় মোড়ানো দিনে বোলাররা অবশ্য স্বাগতিকদের নাগালের বাইরে যেতে দেননি। ২ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৯৫। ৮ রানে পিছিয়ে আছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল।
উইকেটে ছিল জীবন্ত ঘাস। সবুজাভ উইকেটে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হয়নি ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে। সাকিবও জানিয়েছেন, টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতেন। মূলত সবুজাভ উইকেটে নতুন বলে পেসাররা সুবিধা পাবেন, সতেজ ঘাসে ব্যাটিং করা কঠিন হবে, সেই ভাবনাতেই বোলিং চাওয়া।
যেমন চাওয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেয়ে যায় তেমন কিছুই। ৪ বছর আগে এই মাঠেই ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ যা নিজেদের টেস্টে সর্বনিম্ন রান। কেমার রোচ, হোল্ডাররা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এলোমেলো করে দিয়েছিলেন। আজও শুরুটা রোচ করেছিলেন। জয়কে স্লিপে তালুবন্দি করানোর পর শান্তর উইকেট উপচে ফেলেন। এরপর মুমিনুল সিলসের বলে হতাশায় ডুবিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে। তিনজনের কেউই পারেননি রানের খাতা খুলতে।
সম্মিলিত আক্রমণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৩২.৫ ওভারে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিয়েছে। সিলস ও জোসেফ ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন। রোচ ও মায়ার্সের শিকার ২টি করে উইকেট।
সবুজাভ উইকেটে নতুন বল বাংলাদেশের পেসাররাও ছিলেন দুর্দান্ত। মোস্তাফিজ ও খালেদের শুরুর ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান মাত্র ৮। প্রথম ৫ ওভারে কোনো রানই নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। মোস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় ওভারে ব্রেথওয়েটের উইকেট পেয়ে যেতে পারতেন। যদি মুমিনুল সহজ ক্যাচ ছেড়ে না দিতেন।
মোস্তাফিজের প্রথম স্পেল ছিল এরকম, ৫-৪-১-০। বাঁহাতি পেসার দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে পেয়ে যান উইকেট। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জন ক্যাম্পবেলকে ভেতরে ঢোকানো বলে বোল্ড করেন। এরপর ইবাদতের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন রেইমন রেইফার।
বোলিংয়ে বাংলাদেশ ছিল আঁটসাঁট। খুব বেশি আলগা বল দেননি। তাতে ব্যাটসম্যানরাও ছিল প্রবল চাপে। ব্রেথওয়েট ১৪৯ বল খেলে ৪২ রান করেছেন। তার সঙ্গে অপরাজিত থাকা এনক্রুমার বোনার ১২ রান করেছেন ৪৩ বলে।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ