বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুস শুক্কুরের বিরুদ্ধে ‘তেলচুরি ও ডাকাতির’ অভিযোগ এনে তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে আবেদন করেছেন কর্ণফুলীর দুই বাসিন্দা। তারা হলেন-জুলধা ইউনিয়নের ওসমান ও ইসমাইল নামের দুই ব্যক্তি, যাদের পরিচয় ‘বিএনপি ও যুবদল নেতা’ হিসেবে দেওয়া হলেও এ দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
আবেদনটি পুলিশের সদর দপ্তরে পৌঁছালে আইজিপির নির্দেশে বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঠানো হয় ক্রাইম মেট্রোপলিটন শাখায়। সেখানে এন্ট্রি নম্বর ৫৪৯ এবং আইজিপির কার্যালয়ে ৮৯৩ নম্বর ডায়রিতে এ অভিযোগটি নথিভুক্ত হয়। পরে সিএমপি কমিশনার হয়ে বন্দর জোনে বিষয়টি তদন্ত করছেন।

আবেদনে বলা হয়, আব্দুস শুক্কুর তার ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিনকে দিয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি রাতের একটি ঘটনা সামনে এনে ১০ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী থানায় ভিত্তিহীন মামলা করেন। মামলায় জুলধা ইউনিয়নের ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওসমান ও ইসমাইলকে ডিজেল চুরির ঘটনায় জড়ানো হয়। তাদের দাবি, তারা তেলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, ৩ জানুয়ারি রাতে জুলধা ইউনিয়নের খাদ্য ফ্যাক্টরির সামনে ডিজেলবাহী একটি পিকআপ গাড়ি থামিয়ে চালক ও সহকারীকে মারধর করে তেল লুট করা হয়। ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের করেন মেসার্স আব্দুস শুক্কুর অ্যান্ড সন্সের ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিন। এজাহারে বলা হয়, ওসমান ও ইসমাইলের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ চক্র এ ঘটনা ঘটায়। পিকআপটি পরদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হলেও তেল পাওয়া যায়নি।
এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি হচ্ছেন অভিযোগকারী ওসমান ও ইসমাইল। তারা মামলার পর পাল্টা অভিযোগ এনে দাবি করেন, থানার ওসি ও আব্দুস শুক্কুর মিলে চোরাই তেল পাচারের সিন্ডিকেট চালান, আর তাদের ভয় দেখাতে হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে ওসমান ও ইসমাইলের পরিচয় যাচাই করতে গিয়ে জুলধা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কমিটিতে ওসমান নামের কেউ নেই।’
কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবও জানান, ‘জুলধায় যুবদলের কোনো কমিটি নেই।’
অন্যদিকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া ইসমাইলের বিষয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। কর্ণফুলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোর্শেদুর রহমান নয়ন বলেন, ‘ইসমাইল নামে কেউ আমাদের ক্লাবের সদস্য নন।’ অভিযোগে দেওয়া নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘তদন্তকার্য চলমান, বাদী, সাক্ষী ও তদন্তকারী অফিসারের তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারনামীয় আসামীরা তদন্তকার্যকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে- যে কোন নিরপেক্ষ তদন্তেই আসামীদের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি সত্য বলে প্রতীয়মান হবে।’
কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আসা অভিযোগ তদন্তাধীন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’
বিএনএনিউজ/ বিএম