31 C
আবহাওয়া
১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘সোনার বাংলাদেশ’ নির্মাণ হবে, ইনশাআল্লাহ-শেখ হাসিনা

‘সোনার বাংলাদেশ’ নির্মাণ হবে, ইনশাআল্লাহ-শেখ হাসিনা

বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী

বিএনএ,ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতৈ বলেন, “ ১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’, বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহুকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী  গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা-শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ, শহিদ মোহাম্মদ মনসুর আলী এবং শহিদ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান-কে। শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের স্মৃতির প্রতি।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘৭০-এর নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলে আওয়ামী লীগ জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ যথাক্রমে ১৬৭টি এবং ২৯৮টি আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নভেম্বরের ভয়াবহ ঘূর্ণি ঝড়ের তাণ্ডবের কারণে উপদ্রুত এলাকার কয়েকটি আসনে ‘৭১ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্থে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩রা জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সকল সংসদ সদস্য রেসকোর্স ময়দানে ৬-দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের শপথ গ্রহণ করেন। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’-সংগীত দিয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ সময় ‘আমার দেশ তোমার দেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগান দেন। তিনি ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনাবলী সারা পূর্ব বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। তাঁর নির্দেশেই বাংলাদেশের সকল প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর নামে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে, জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান-‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। — চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।’ এর অব্যবহিত পরেই অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে।

১০ এপ্রিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি গণপরিষদ গঠনপূর্বক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্তৃক ইতোপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ় সমর্থন ও অনুমোদনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর সরকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করে। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শতাধিক দেশি-বিদেশি সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথগ্রহণ করেন। পাশাপাশি এদিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অনুমোদিত হয়। মেহেরপুর হয়ে ওঠে অস্থায়ী সরকারের রাজধানী এবং সেদিন থেকে এ স্থানটি ‘মুজিবনগর’ নামে পরিচিতি লাভ করে। মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান বিমান বাহিনী বোমাবর্ষণ ও আক্রমণ চালিয়ে মেহেরপুর দখল করে। ফলে, অস্থায়ী সরকার ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকে প্রবাসী সরকারের কার্যক্রম চালাতে থাকে। বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী করে পূর্ব বাংলায় নারকীয় তাণ্ডবলীলা ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সাড়ে ৩ বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। ৩রা নভেম্বর জেলখানায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চারনেতাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিলনা। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা জাতির পিতাসহ জাতীয় চারনেতা হত্যার বিচার করেছি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করেছি। সেই থেকে গত বারো বছরে আমরা উন্নয়নের সকল সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি। আমরা দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশের নীচে নামিয়ে এনেছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমরা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছি এবং এর বাস্তবায়নও শুরু করেছি।

মুজিবনগর দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে বাণীতে প্রধানমন্ত্রী  আহ্বান জানান সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ত্রিশ লাখ শহিদ ও দু’লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে। জাতির পিতা যে অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ নির্মাণে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সকল আশুষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কার্যকরি ভূমিকা রাখব, ইনশাআল্লাহ।

বিএনএনিউজ২৪/এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ