বিএনএ, চুয়েট: চট্টগ্রামে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও গ্যাং সদস্যরা ঘটাচ্ছে নানা অঘটন। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, স্থাপনা ভাংচুর, অপহরণসহ নানান ধরণের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে তারা। এবার কিশোর গ্যাংয়ের হামলা চালায় চুয়েট বাসে।
বুধবার (১৫ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে চুয়েটের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা বুড়িগঙ্গা বাসে (চুয়েট বাস) অতর্কিত হামলা চালায় ২০ থেকে ২৫ জনের একটি গ্রুপ।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা বাসটি আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর মুরাদপুর সংলগ্ন আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের শেষ প্রান্তে পৌঁছালে এমন ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও বাস চালকের মাধ্যমে জানা যায়, কতিপয় কিশোর গ্যাংয়ের ২০ জনের বেশি সদস্য বাসের গতি অবরোধ করে। এমন অবস্থায় তাদের সরে যেতে বলা হলে তারা গালিগালাজ ও ইট পাটকেল ছোঁড়া শুরু করে। এমন অবস্থায় বুড়িগঙ্গা বাসের পিছনের কাঁচ এবং জানালাগুলো ভেঙে যায়। ভাঙ্গা কাঁচের টুকরা ও ইটের আঘাতে বাসে অবস্থানরত দুইজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
বুড়িগঙ্গা বাস ঘটনাস্থলে পৌছানোর পূর্বে অন্য কয়েকটি বাসেও আক্রমণের চেষ্টা করে। এমন অবস্থায় বাস চালক বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ভেবে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
চুয়েটের চতুর্থ বর্ষের (১৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী মো নাঈম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। শহরের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা উচিত। বিশেষ করে বাসে নারী শিক্ষার্থী নিরাপত্তার বিষয়টি চুয়েট প্রশাসনের পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে আরো গুরুত্ব দিয়ে দেখে বিষয়গুলো সেটা আমার অনুরোধ থাকবে।
বুড়িগঙ্গা বাসের চালক আনন্দ বড়ুয়া জানান, আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের মুখেই হঠাৎ ২০-২৫ জন ছেলে এসে অতর্কিতভাবে বাসের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারে। বাসের সামনের কাঁচ ভেঙে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে আতঙ্কিত হয়ে নিরাপত্তার জন্য বাস দ্রুত চালিয়ে স্থান ত্যাগ করে চুয়েটে চলে আসি। তবে কি কারণে এমন ঘটনা ঘটলো আমার জানা নেই।
এদিকে অন্য আরেকটি বাসের চালক (তুরাগ বাস) রতন দে জানান, গতকাল রাতে মুরাদপুরে চুয়েটগামী তুরাগ বাস রানিং ছিলো। এমন সময় এক পথচারী রাস্তায় তার চলাচলের জন্য হাত দিয়ে বাসটিকে সিগনাল দেন। কিন্তু বাস যথাযথ গতিতে ছিলো। তৎক্ষণাৎ বাস ব্রেক করার পর বাসে সহায়ক জসিম ও শিক্ষার্থীরা নেমে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করে। এসময় ঐ পথচারীর সাথে হালকা তর্ক বিতর্ক হয়। তবে ব্যাপারটি সেখানেই মিমাংসা হয়ে গিয়েছিলো। এই ঘটনার সেখানেই শেষ। এর রেশ ধরে পেছনের বুড়িগঙ্গা বাসে হামলার চেষ্টা করা হয়েছিলো কি না আমরা নিশ্চিত নই।
এমতাবস্থায় সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা চুয়েট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাসে হামলার ঐ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এই ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি শহরের সুনির্দিষ্ট জায়গা থেকে ছাত্র ছাত্রীরা যেন বাসে সঠিক ভাবে ওঠতে পারে এবং তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নিব।
বিএনএ/ মো. গোলাম রব্বানী, বিএম
