বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় অজ্ঞাত কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল (৬০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। আব্দুর রাজ্জাক তার ভাইকে ফাসাঁতে গণধর্ষণের পর ওই কিশোরীকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি পুলিশ)। নিহত অজ্ঞাত কিশোরীর নাম রিভা আক্তার। সে নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার মো. দুলাল মিয়ার মেয়ে।
গার্মেন্টসে চাকরী করার সুবাদে গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রাজ্জাক জেলার ধোবাউড়া উপজেলার টাংগাটি মধ্যপাড়া এলাকার মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। সে গাজীপুর গাছা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সেখানে নিজেকে সংবাদ কর্মী, হারবাল ওষুধের কবিরাজ ও সর্বশেষ মাদ্রাসার মোহতামিমের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা শাখার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে বুধবার (১৬ মার্চ) বিকালে গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকা থেকে আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় থাকার সুবাদে কিশোরী রিভা আক্তারের সাথে পরিচয় হয় প্রতারক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। রিভা আক্তারের কাছে আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে সংবাদ কর্মী পরিচয় দেন। পরে রিভা আক্তারকে সংবাদ কর্মী বানানোর প্রলোভনে গত দুই মাস আগে বিয়ে করেন। রিভা আক্তার চাকরী ও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে সম্প্রতি আব্দুর রাজ্জাককে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে আব্দুর রাজ্জাক ক্ষিপ্ত হয়ে রিভাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তিনি আরও বলেন, এমতাবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের সাথে ভাই আমিনুল ইসলামের সাথে তার পৈত্রিক জমি নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। তার জমি হাতিয়ে নিতে ও রিভার চাপ থেকে বাঁচতে আমিনুল ইসলামকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন আব্দুর রাজ্জাক। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমিনুল ইসলামের সাথে বিরোধ আছে এমন দু’জনকে খোঁজে বের করে হত্যার পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেন। তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ সকাল ১১টার দিকে আব্দুর রাজ্জাক রিভা আক্তারকে নিয়ে গাজীপুর থেকে ধোবাউড়ার তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসবে বলে রওনা দেন। দিনভর ঘুরাফেরা করে সন্ধ্যায় ধোবাউড়া গোয়াতলা কংশ নদীর কাছে এসে পৌঁছায়।
হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী রিভা আক্তারকে অপর দুুই হত্যাকারীর হাতে তুল দেন। ওই দুুুুইজন মিলে রিভা আক্তারকে ধর্ষণ করে। পরে আব্দুর রাজ্জাকসহ তিনজন মিলে রিভা আক্তারের গলায় উড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে। এমতাবস্থায় আমিনুল ইসলামকে ফাঁসাতে মরদেহ তিনজন মিলে তার বাড়ির কাছে এনে ধান ক্ষেতে ফেলে দেন। একই সাথে আমিনুল ইসলামের ছেলে শহিদুল্লাহ, রিভা আক্তারের জন্মনিবন্ধন ও রিভার ব্যবহৃত মোবাইল নিহতের পকেটে রেখে দিয়ে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান।
পরদিন মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকালে রিভা আক্তারের মরদেহ ধান ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ধোবাউড়া থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। এঘটনায় বুধবার (১৬ মার্চ) ধোবাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিএনএনিউজ২৪.কম/হামিমুর রহমান/এনএএম