বিএনএ,ঢাকা: দুই দশক আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে ১০ আসামির ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।সেইসঙ্গে মামলার একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বুধবার(১৭ ফেব্রুয়ারি)এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ।
বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত এ রায় পড়ে হাইকোর্ট।ভাষার মাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলায় এ মামলার রায় দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আহসান।
যাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে তারা হলেন- ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মওলানা শওকত ওসমান,মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ১০ আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হয়। পরে বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করে হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ২ এপ্রিল এ মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডের রায়ের অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল।হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এ মামলায় মূল আসামি ছিলেন। অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় উপরিউক্ত ১০ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম। গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন বিচারক।
এর মধ্যে আসামি মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেয়া হয়।
পরে এ মামলার রায়সহ সব নথি ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। বুধবারের রায়ে শুধু ১৪ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন মিয়াকে দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে দণ্ড পাওয়া বাকি সবার সাজা ও অর্থ জরিমানা বহাল রাখা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। ওই সময় শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এই বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় মামলাটি দায়ের করেন তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি
