বিএনএ, সীতাকুণ্ড : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সোলেমান সওদাগর ওয়াকফ এস্টেট এর মোতওয়াল্লী মোহাম্মদ আলী তার ভাই লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। ওয়াকফ এস্টেট এর জমিদাতা সোলেমানের দুই মেয়ে প্রতিকার ওয়াকফ এস্টেট ও দুনীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করলে ওয়াকফ প্রশাসক ওয়ারিশগণের পাপ্য অংশের টাকা বুঝিয়ে দিতে নোটিশ জারি করেছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে সাংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ওয়াকফ এস্টেট এর জমিদাতা মৃত সোলেমানের দুই মেয়ে জোসনা আক্তার ও সামশুন নাহার নিলু আক্তার। ওয়াকফ সম্পতির আয়ের প্রাপ্য টাকা চাইতে গিয়ে তারা দুই বোন মিথ্যা মামলা ও নানা হয়রানীর শিকার হয়ে এখন নি:স্ব। ৭০ বছর বয়সী জোহরা বেগম কোন রকম জীবন যাপন করলেও অপর বোন সামশুন নাহার প্রতিবন্ধি বৃদ্ধা স্বামীকে নিয়ে দিনাতিপাত করছে ভিক্ষাবৃত্তি করে।
সীতাকুণ্ড পৌরসভার কলেজ রোড় এলাকায় ১৯৮২ সালে ১০ শতক জায়গা দান করে ‘পাক্কাঘাট মসজিদ’ নির্মাণ করেন সোলেমান সওদাগর নামে এক ব্যক্তি। ওই জায়গার মসজিদের পাশে বহুতল ভবন ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়। সোলেমান সওদাগর ওই সময় জায়গা ও মার্কেট শর্ত সাপেক্ষে ওয়াকফ করে দেন।
শর্তে উল্লেখ আছে সম্পত্তির (দোকান ও ভাড়াঘর) আয়ের ১০ ভাগ মসজিদের কার্যাদির শাসন, সংরক্ষন ইমাম মোয়াজ্জেনের বেতন দেওয়া হইবে। বাদ বাকী আয়ের শতকরা ৪০ ভাগ মমজিদ বাবদ ৫ভাগ দান খয়রাত ও ৫৫ ভাগ মোতয়াল্লী নিজ ও অপরাপর আওলাদগণের ভরণ পোষনের জন্য ব্যায় করা হইবে বলে ওয়াকফনামা দলিল উল্লেখ করা হয়। সোলেমান সওদাগর মৃতকালে ছেলে শফিউল আলম মোতওয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে পুরুষানুক্রমে মোহাম্মদ আলী মোতওয়াল্লী দায়িত্ব নেওয়ার পর তার ভাই লিয়াকত মিলে তাদের সোলেমানের দুই মেয়েকে সম্পত্তির আয়ের অংশ থেকে বঞ্চিত করে তা আত্নসাত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জোসনা ও সামশুননাহার বলেন, আমার পিতা ওয়াকফনামা দলিলে কে কত অংশ পাবে সব উল্লেখ করলেও মোহাম্মদ আলী মোতওয়াল্লীর দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা আমাদের পাপ্য না দিয়ে তা আত্নসাত করেছে।
তারা বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে প্রতিমাসে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা আয় হয়। এতে গত ২৪ বছরে তাদের দুই বোনের প্রাপ্য প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্নসাত করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
মোতওয়াল্লী মোহাম্মদ আলী জানান, ওয়াকফ এস্টেটে যে দলিল দেওয়া হয়েছে তাতে ছেলের পক্ষের বংশপরম্পরায়ন এই এস্টেট এর আয় ভোগ করতে পারবে। কোন মেয়ে বা তাদের ওয়ারিশগণ এ এস্টেটের আয় ভোগ দখল করতে পারবে না। সেই হিসাবে তাদের আয়ের কোন টাকা দেওয়া হয়নি।
বিএনএনিউজ/সবুজ শর্মা, জেবি